প্রধানমন্ত্রী

দেশের মানুষ যাতে আর বিচারহীনতার সংস্কৃতির শিকার না হয় সেজন্য সতর্ক থাকুন : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা হত্যার পর দেশে যে ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি’ চালু হয়েছিল তা যেন আবার ফিরে আসতে না পারে, সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে আবারো যেন দায়মুক্তির সংস্কৃতি আসতে না পারে সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। তাঁর মত আর কেউ যেন মা-বাবা, ভাইদের হারিয়ে বিচারহীনতার সংস্কৃতির শিকার না হয়।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বিকেলে ‘বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট প্রতিষ্ঠার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি চাই, আমাদের মত কেউ যেন আর বিচারহীনতার (ইনডেমনিটি) কষ্ট না পায়, বাবা-মা-ভাই মারা গেল তার বিচার চাইতে পারবো না আবার তাদেরকেই গণতন্ত্রের ধারক ও বাহক বলা হয় এটা সত্যিই দেশের জন্য, জাতির জন্য, স্বাধীনতার জন্য, একটা স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক। এরকম অবস্থায় যেন বাংলাদেশ আর কোন দিন না পড়ে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা সারাটা জীবন এদেশের মানুষের জন্য এত ত্যাগ শিকার করলেন তাঁকে হত্যা করে প্রকৃত পক্ষে এদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং আদর্শকেই হত্যা করা হয়েছিল। আর এই হত্যাকারিদের বিচার যাতে না হয় সেজন্য ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়। আর এর মাধ্যমে খুনিদের বিচারের হাত থেকে শুধু যে মুক্তি দিয়েছিল তাই নয়, বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে খুনীদের পুরস্কৃতও করে। বাংলাদেশে শুরু হয় বিচারহীনতার এক কালচার।
অথচ জাতির পিতা সব সময় চেয়েছেন ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে। কিন্তু, কি দুর্ভাগ্য আমাদের তাঁর হত্যাকারিদের বিচার যেন না হয় দেশে সে ধরণের আইনও প্রণয়ন করা হয়েছিল, বলেন তিনি।
একুশ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে এই ইনডেমনিটি আইন বাতিলের উদ্যোগ নেয় এবং এর মাধ্যমে জাতির পিতা হত্যার বিচারের পথ অবারিত হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি ধন্যবাদ জানাই সুপ্রীম কোর্টকে, কারণ, এই অর্ডিন্যান্স যাতে বাতিল না হয় সেজন্য আমাদের বিরোধী পক্ষ সবসময় সক্রিয় ছিল। কাজেই কোর্টে যখন এটা আসে সুপ্রীম কোর্ট তাদের রায়ে এটা বাতিল করার নির্দেশ দেয় এবং পার্লামেন্টে আমরা তা বাতিল করি।’
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান স্বাগত বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
বিশেষ অতিথি ছিলেন ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি মুকেশ কুমার রশিক ভাই শাহ এবং বাংলাদেশ আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক।
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে ‘ন্যায় বিচারের অনির্বাণ সুবর্ণ যাত্রা’ শীর্ষক একটি অডিও-ভিজ্যুয়াল ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে ৫০ টাকার স্মারক নোট এবং স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেন।
তিনি ৫০ বছরের পথ চলায় সুপ্রিম কোর্ট এবং বাংলাদেশের সংবিধানের ইংরেজি কপির মোড়ক উন্মোচন করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নি¤œ আদালতের বিচারকদের মধ্যে ছয়টি ক্যাটাগরিতে এই প্রথমবারের মত প্রবর্তিত প্রধান বিচারপতি পদক (পুরষ্কার) তুলে দেন।
পাঁচটি ক্যাটাগরিতে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা তথা নি¤œ আদালতের বিচারকদের ‘প্রধান বিচারপতি পদক’ দেওয়া হয়েছে। আর দলগতভাবে এ পদক পেয়েছেন ময়মনসিংহ জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
ব্যক্তিগতভাবে পদক প্রাপ্ত ৫ ক্যাটাগরির বিচারক হলেন-জেলা ও দায়রা জজ ক্যাটাগরিতে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ বেগম জেবুন্নেছা, অতিরিক্ত জেলা জজ ক্যাটাগরিতে টাঙ্গাইলের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সউদ হাসান, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ ক্যাটাগরিতে নওগাঁর যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মো. খোরশেদ আলম, সিনিয়র সহকারি জজ ক্যাটাগরিতে চট্টগ্রামের সিনিয়র সহকারী জজ মোসা. রেশমা খাতুন এবং সহকারি জজ ক্যাটাগরিতে রংপুরের সহকারি জজ মো. হাসিনুর রহমান মিলন।
আর দলগতভাবে পদক প্রাপ্ত জেলা হল-ময়মনসিংহ জেলা ও দায়রা জজ। এ জেলার পক্ষে জেলা ও দায়রা জজ হেলাল উদ্দিন পদক গ্রহণ করেন।
ব্যক্তিগতভাবে পদক প্রাপ্ত প্রত্যেককে ২২ ক্যারেট ১৬ গ্রাম স্বর্ণের পদক এবং দুই লাখ টাকার চেক এবং ময়মনসিংহ জেলাকে ২২ ক্যারেট ১৬ গ্রাম স্বর্ণের পদক এবং ৫ লাখ টাকার চেক দেওয়া হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, এ দেশে আদালতে বোমা মেরে বিচারক হত্যা করা হয়েছে, আইনজীবীকেও হত্যা করা হয়েছে। আমিই যে শুধু গ্রেনেড হামলার শিকার হয়েছি তা নয়, আমাদের বিচারকরাও এ থেকে রক্ষা পাননি। ঝালকাঠি ও গাজীপুরে এ ধরনের ঘটনা ঘটানো হয়েছিল। তাদের অগ্নিসন্ত্রাস ও বোমাবাজি সম্পর্কে আপনারা জানেন। সেই ঘটনার পর থেকে আমরা বিচারকদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সবসময় প্রচেষ্টা ছিল সর্বোচ্চ আদালত স্বাধীনভাবে চলবে। তাই তার আর্থিক ব্যবস্থাপনা যেটা আগে ছিল সরকারপ্রধানের হাতে, সেটা সম্পূর্ণভাবে সুপ্রিমকোর্টের হাতে হস্তান্তর করি। আলাদা বাজেট বরাদ্দ দিই। বিধিমালা প্রণয়নের ব্যবস্থা করি। স্থায়ী আইন কমিশন গঠন করি। জুডিশিয়াল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে নেই এটা খুব অবাককা-! আমি কিন্তু সেটাও তৈরি করে দিয়েছিলাম। আমাদের কোনো ড্রাফট উইং ছিল না। ড্রাফট উইংও তৈরি করে দিয়েছি। ১৯৯৬ সালে কেউ কম্পিউটার ব্যবহার করত না। আমি প্রধানমন্ত্রীর ফান্ড থেকে একটি কম্পিউটার কিনে প্রথম ড্রাফট উইং তৈরি করে দিয়েছিলাম। আর সেই সঙ্গে এ্যানেক্স ভবন তৈরি করে দিই।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই মানুষের মৌলিক মানবাধিকার রক্ষা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং স্বল্প সময়ে বিচার প্রার্থীদের ন্যায়বিচার প্রদানে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেথ করে তিনি বলেন, অবৈধ ও অসাংবিধানিক  পন্থায় এই সংবিধান বা ইহার কোন অনুচ্ছেদ রদ, রহিত, বাতিল বা স্থগিত করলে কিংবা উহা করিবার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ বা ষড়যন্ত্র করলে তা রাষ্ট্রদ্রোহিতা হিসেবে গণ্য হবে মর্মে পঞ্চদশ সংশোধনী সংবিধানে সন্নিবেশিত করা হয়েছে। ফলে গণতান্ত্রিক ধারাটা অব্যাহত রাখা এবং মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে, যা দীর্ঘদিন ছিলনা।
বিচারালয়ে আইনজীবীগণ অপরিহার্য্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইনজীবীদের প্রতি আমার আহবান থাকবে, ‘তারা যেন তাদের মেধা, প্রতিভা, সততা ও আন্তরিকতা দিয়ে বিচার প্রার্থীদের দ্রুত ন্যায় বিচার প্রাপ্তিতে সহায়তা করেন।’
সরকার প্রধান বলেন, আমাদের যে লক্ষ্য ছিল ২০২১ সালে আমরা যখন স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করব্ েতখন বাংলাদেশ অন্তত নিজ মর্যাদায় উদ্ভাসিত হবে । কাজেই এটুকু বলতে পারি ২০০৮ এর নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করার পর থেকে এ পর্যন্ত দেশ পরিচালনা করে আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি।
তিনি বলেন, একসময় এই বাংলাদেশকে যারা একটু তাচ্ছিল্যের  চোখে দেখতো, এখন তারাই মর্যাদার চোখে দেখে। এটা ধরে রাখতে হবে। ২০৪১ সালে আমরা উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। আমরা  সেই প্রত্যয় নিয়ে এগুচ্ছি। সেইসাথে এখন যেহেতু ডিজিটাল ডিভাইসের যুগ কাজেই সকল ক্ষেত্রে সেই ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা আগামীর বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবেও গড়ে তুলবো।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা শুরু করার পর অন্য সরকারগুলো বন্ধ করলেও আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৮ সালে রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসে মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। বিচার বিভাগ তার নিরপেক্ষ ও সাহসী ভূমিকা দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে  চলেছে।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ে তুলবো। আমরা তা গড়ে তুলেছি। করোনা মহামারীর সময়ে আদালত কর্তৃক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার আইন, ২০২০ প্রণয়ন করা হয়। এ সময়ে মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ভার্চুয়াল কোর্টে বিচার কাজ পরিচালনা করা হয়।
মানুষের বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিতে তাঁর সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবনের নির্মাণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বিচার বিভাগ ডিজিটাইজেশন ও ই-জুডিসিয়ারি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আর্থিকভাবে অসচ্ছল মানুষের সুবিচার নিশ্চিত করা সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। এ লক্ষ্যে আমরা ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০’ প্রণয়ন করি। অর্থের অভাবে ন্যায়বিচার পাওয়া থেকে অসহায় বিচার প্রার্থী জনগণ যেন বঞ্চিত না হয়; তাই জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ে এই লিগ্যাল এইডের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ১৬৪৩০ নাম্বার থেকে কল করে বিনামূল্যে পাওয়া যাচ্ছে আইনী পরামর্শ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক উদ্ভাবিত ৬টি কোর্টে প্রযুক্তির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যার মাধ্যমে সাধারণ বিচারপ্রার্থীগণ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আদালতের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সেবা গ্রহণ করতে পারছে এবং অধস্তন আদালতের বিচারকগণ তাদের রায়/আদেশ ও স্টেটমেন্ট অনলাইনে সরাসরি আপলোড করতে পারবে। অধস্তন আদালতের মামলা জট কমাতে এবং আদালতের কার্যক্রম তদারকির লক্ষ্যে বাংলাদেশের ৮টি বিভাগের জন্য ৮জন বিচারপতির সমন্বয়ে মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং উক্ত কমিটি তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে মনিটরিং টুলসের মাধ্যমে তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অধস্তন আদালতে মামলা নিষ্পত্তিতে অনেক গতি বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মামলা দায়েরের তুলনায় নিষ্পত্তির হার শতভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে বেশ কয়েকটি জেলায়।
পাশাপাশি বাংলায় রায় লেখার ব্যবস্থা করা হয়েছে এজন্য তিনি প্রধান বিচারপতিকে ধন্যবাদ জানান। তাছাড়া সাধারণ বিচারপ্রার্থীদের দূর্দশা লাঘবে প্রধান বিচারপতি কর্তৃক সুপ্রিম কোর্টসহ প্রত্যেক জেলা জজ আদালতে ‘ন্যায়কুঞ্জ’ নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে ‘ন্যায়কুঞ্জ’ নির্মাণ করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট প্রতিষ্ঠার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে জাতির পিতার স্মারক স্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি আইনী বিশ^বিদ্যালয় করার প্রস্তাব অনেকে দিয়েছেন, আমরা মনে হয় সেটাও করে দেব। কেননা এটা সকলের জন্য একান্তভাবে দরকার।
তিনি বলেন, বিচারকরা পৃথক বেতন কাঠামো ও ভাতার সুবিধা ভোগ করছেন। বিচারকদের দক্ষতা ও বিচার কাজের মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমাদের সরকার বিচারকদের বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার অবদানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্বপ্ন দেখেছিলেন একটি শোষণ ও বঞ্চনামুক্ত স্বাধীন সোনার বাংলার। সেখানে মানুষে মানুষে থাকবে না ভেদা-ভেদ, অবসান ঘটবে ধনী-গরিবের বৈষম্যের, যেখানে জনগণ অত্যন্ত কম খরচে স্বল্প সময়ের মধ্যে ন্যায়-বিচার লাভ করবে। সেজন্য দেশ স্বাধীনের মাত্র ১ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে আমরা সংবিধান প্রণনয়ন করতে সক্ষম হই এবং ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইন ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান’ কার্যকর হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একই বছরের ১৮ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিচারালয় ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট’ উদ্বোধন করেন।
মানুষের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে জাতির পিতার সে সময় প্রদত্ত ভাষণের চুম্বকাংশ অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
জাতির পিতা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট উদ্বোধণকালে বলেন, ‘এত বিপদ-আপদ, এত অভাব-অনটন, দুঃখ-কষ্টের মধ্যে শাসনতন্ত্র দিয়েছি। এত তাড়াতাড়ি এজন্য দিয়েছি যে আইনের শাসনে বিশ্বাস করি এবং সেজন্যে শাসনতন্ত্র দেওয়া হয়েছে। আজ আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক। আমাদের শাসনতন্ত্র হয়েছে যার জন্য বহু রক্ত গেছে- এ দেশে আজ আমাদের সুপ্রিম কোর্ট হয়েছে। যার কাছে মানুষ বিচার আশা করে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *