জাতীয়জাতীয় সংবাদশীর্ষ সংবাদ

আ.লীগ আবারও দেশের নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী ২৪ ডিসেম্বর সুশৃঙ্খল সম্মেলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ দেশবাসীকে দেখাতে চায়—তারা আবারও দেশের নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, ‘‘শুনেছিলাম, ডিজিটাল বাংলাদেশের ‘কাউন্টার ভিশন-২০৩০’ বিএনপির, সেটা কোথায়?’’

সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আওয়ামী লীগের শৃঙ্খলা ও স্বেচ্ছাসেবক উপ-কমিটি এবং মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপ-কমিটির যৌথ বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নেত্রী (শেখ হাসিনা) একটি সুশৃঙ্খল সম্মেলন দেখতে চান। জাতিকে দেখাতে চান, আওয়ামী লীগ আবারও এই দেশের নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত।’

সুশৃঙ্খল কর্মী বাহিনী ছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশ হবে না, দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশের পূর্ব শর্ত শৃঙ্খলা। সভা করবো সুশৃঙ্খল। আমার ধারণা, এবার ঐতিহাসিক সম্মেলন হবে। কারণ, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে যে গণজাগরণের ঢেউ, গোটা দেশ জেগে উঠেছে বিজয়ের মাসে, যেখানেই সমাবেশ করেছি, সেখানে স্রোতের মতো মানুষ। সমুদ্রের উত্তাল তরঙ্গ যেন আছড়ে পড়েছে। এরকম তরঙ্গ বিক্ষোভ দেখতে পাচ্ছি।’

বিজয়ের মাসে সম্মেলনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানুষের উপস্থিতি হবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ব্যবস্থাপনাটাও ভালোভাবে করতে হবে। সম্মেলন সাদামাটা হবে। উপস্থিতি সাদামাটা হচ্ছে না। এটা অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করবে বলে আমার বিশ্বাস। সাদামাটা সাজসজ্জা, আলোক সজ্জা হবে।’

বিএনপির রাষ্ট্র মেরামতের কর্মসূচির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাষ্ট্রকে যারা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে, তারা আবার এই রাষ্ট্র মেরামত করবে। মেরামত তো শেখ হাসিনা করেছেন। করেছেন বলেই তো আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল।’

তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ধ্বংস করেছে। দুর্নীতি ও লুটপাট করে কোষাগার খালি করেছে। রিজার্ভ ৪ বিলিয়ন ডলারেরও নিচে ছিল। আমাদের নেত্রী (শেখ হাসিনা) ৪৮ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে গেছেন।’

যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজকে অনেকে রাষ্ট্র মেরামত করার প্রয়াস নিয়েছে। গতবারও ২৩ দল ছিল। এবার ৩৩ দল। বাম, ডান, এরমধ্যে প্রগতিশীল আর প্রতিক্রিয়াশীল একসঙ্গে হয়ে গেছে। সব এক কাতারে একাকার, লক্ষ্য কি শেখ হাসিনাকে হটানো!’

বিএনপির কর্মসূচির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘শুনেছিলাম, ডিজিটাল বাংলাদেশের কাউন্টার ভিশন-২০৩০, বিএনপির। সেটা কোথায়? এখন কর্মসূচি দিয়ে দেখাচ্ছে তারা আছে। তাদের নেতাকর্মীরা বহুদিন ক্ষমতায় নেই, তাতেই খায় খায় ভাব। তাদের একটু খুশি রাখতে হবে। সেই জন্য অনেক কথা বলছে।’

কিছু কিছু সভায় অতিথিদের নাম বলতে বলতেই সময় শেষ হয়ে যায় দাবি করে কাদের বলেন, ‘কোন নেতা অখুশি হবেন। এটাও মাথায় থাকে পরবর্তী সময়ে তার পদায়নে সমস্যা হতে পারে। এসব চিন্তা করেও অনেকেই নাম বলে না। এগুলো থেকে বের হয়ে আসতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘কাউকে দুই মিনিট সময় দিলে তিনি পাঁচ মিনিটই সম্বোধনে শেষ করে দেন। মাগরিবের আজান দিচ্ছে— তখন প্রধান অতিথি সময় পান। মিটিংয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য শ্রোতাদের শুনতে দিতে হবে। না হলে এটা তো অসম্পূর্ণ থেকে যায়।’

মানুষের চিন্তা-চেতনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পথ চলতে হবে উল্লেখ করে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মানুষ কী চাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম কাজ মানুষকে রক্ষা করা। সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দিয়েছেন করোনায়। এখন (বৈশ্বিক সংকটে) বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে।’

শৃঙ্খলার দায়িত্বে যারা আছেন, তারা কয়জন জেলার নেতাদের চেনেন সেটা নিয়ে কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘অচেনা মুখ দিয়ে হবে না। আওয়ামী লীগের অনেক বড় বড় নেতা আছেন, যারা জেলার সব নেতাকে চেনেন না।’

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও শৃঙ্খলা উপ-কমিটির আহ্বায়ক আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন—আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুস সবুর, কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *