প্রধানমন্ত্রী

‘হারানোর কিছু নেই, আপনারাই আমাকে আগলে রেখেছেন’: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

দেশের মানুষের ভালোবাসা চেয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি বাবা, মা ও ভাই সবাইকে হারিয়েছি। নতুন করে হারানোর কিছু নেই। হারানোর কষ্ট আমার চেয়ে কেউ ভালো বুঝবে না। আপনাদের কাছে বাবা, মায়ের স্নেহ, ভাইবোনের ভালোবাসা পাওয়ার আশা রাখি। আপনারা আমার পরিবার। আপনারাই আমাকে আগলে রেখেছেন। একমাত্র চাওয়া, যতক্ষণ ক্ষমতায় থাকবো দেশের মানুষের আহারের সংস্থান করা আমার কাজ। টিসিবির মাধ্যমে সস্তায় চাল-ডাল, তেল, চিনি পাওয়ার ব্যবস্থা করেছি। দেশের একজন মানুষও অভুক্ত থাকবে না।’
দেশের কোনও মানুষ গৃহহীন থাকবে না জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধশীল দেশে রূপান্তরের কাজ চলছে। ২০৪১ সালে আমরা সে লক্ষ্যে পৌঁছাবো, ইনশাল্লাহ। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় কোনও মানুষ ঠিকানাহীন ও গৃহহীন থাকবে না।’
বুধবার (৭ ডিসেম্বর) কক্সবাজার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানবিক কারণে আমরা বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছিলাম। তাদের যত দ্রুত সম্ভব প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা চলমান রয়েছে। স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর এই কক্সবাজার তথা বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের প্রতি কেউ মুখ ফিরে তাকায়নি। দীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে কক্সবাজারকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছিল। ২০০১ সালে আবারও বিএনপি ক্ষমতায় এসে সেসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড থমকে দেয়। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় এলে কক্সবাজারে একে একে ১২টি মেগা প্রকল্পসহ ৭৩টি উন্নয়ন প্রকল্প এখন চলমান। ইতোমধ্যে ২৯টি প্রকল্প সমাপ্ত করতে পেরেছি। কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, রেললাইন, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে জনগণ এর সুফল ভোগ করতে পারবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আমরা শান্তির র‌্যালি করেছিলাম। সেখানে গ্রেনেড হামলা করেছিল খালেদা জিয়ার চক্র। এতে আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানসহ ২২ নেতাকর্মীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারা খালেদা জিয়ার কাজ। পেট্রোল সন্ত্রাসে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছে তারা। জামায়াত-বিএনপি হত্যা, গুম, খুনসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত। অস্ত্র চোরাকারবারের মামলায় অভিযুক্ত তারেক রহমান চক্র জঙ্গিবাদের মদতদাতা। তারা ধ্বংস ছাড়া কিছুই দিতে পারে না।’
কক্সবাজারের পর্যটনকে ঢেলে সাজানোর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘টেকনাফের সাবরাংয়ে বিদেশিদের জন্য এক্সক্লুসিভ জোন করা হচ্ছে। পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে কক্সবাজারকে। আপনারা ২০১৮ সালে নৌকায় ভোট দিয়েছেন, আমরা ক্ষমতায় এসেছি। টানা তিনবার ক্ষমতায় আছি। দেশের উন্নয়নে কাজ করছি। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ভোট হবে, তখনও ভোট দিয়ে আমাদের জয়যুক্ত করবেন।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রী জনসভায় উপস্থিত জনতাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনারা নৌকায় ভোট দেবেন? উপস্থিত জনতা হাত তুলে তখন তাকে প্রতিশ্রুতি দেন। তার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আবার আসিবো ফিরে এই কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের তীরে।’
জনসভায় আসা নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা
কক্সবাজারে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় আসা নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারের জন্য না চাইতেই অনেক কিছু দিয়েছেন, কক্সবাজারে অনেক বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন। আগামীতেও আওয়ামী লীগের সরকার চান তারা। শেখ হাসিনা আবারও ক্ষমতায় আসবেন, বারবার ক্ষমতায় আসবেন- এটাই তাদের প্রত্যাশা।
দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের কারণে কক্সবাজারে আইনশৃঙ্খলাসহ বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রত্যাশা, অবিলম্বে রোহিঙ্গাদের যেন তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *