সীমান্তে হত্যা শূন্যে নামাতে ঐকমত্য
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে প্রাণহানির সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে দুই দেশের শীর্ষ নেতা সীমান্তে হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) মোদি-হাসিনা শীর্ষ বৈঠক নিয়ে ৩৩ অনুচ্ছেদের একটি বিবৃতিতে সীমান্তে হত্যা বন্ধে তাদের এমন অবস্থানের ব্যাপারে জানানো হয়েছে।
এর বাইরেও দ্বিপাক্ষিক রাজনীতি, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য, সংযুক্তি, পানিসম্পদ, উন্নয়ন সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক বিনিময়, জনগণের মেলবন্ধন নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয় বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
দুই শীর্ষ নেতা পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন, ইন্টারনেট নিরাপত্তা, তথ্য যোগাযোগ, মহাকাশপ্রযুক্তি, পরিবেশবান্ধব ও ব্লু ইকোনমির মতো নতুন ক্ষেত্রেও পারস্পারিক সহযোগিতা বাড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
এর আগে, মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউজে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে আলোচনা করেন। কোভিড-১৯ মহামারি ও বৈশ্বিক পরিস্থিতির দরুন সরবরাহব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ার প্রেক্ষাপটে তারা এ অঞ্চলের সমৃদ্ধি ও উন্নয়নে বন্ধুত্ব ও অংশীদারত্বের চেতনায় ব্যাপক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানানো হয়েছে।
এদিকে, দ্বিপক্ষীয় ও উপ-আঞ্চলিক রেল, সড়ক ও অন্যান্য সংযুক্তির বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন দুই নেতা। ভারত থেকে চাল, গম, চিনি, পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের মতো নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করার অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। ভারত নিজেদের জোগানের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ইতিবাচকভাবে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে। এর বাইরে, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ-মৌলবাদের বিস্তার রুখতে দুই প্রধানমন্ত্রীই জোরালো অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
পানিবণ্টনে সহযোগিতার অংশ হিসেবে কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টনে সমঝোতা স্মারক সই হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন মোদি-হাসিনা। ত্রিপুরা রাজ্যের সেচের প্রয়োজনীয়তাকে বিবেচনায় নিয়ে ফেনী নদীর অন্তর্বর্তী চুক্তি সইয়ের জন্য বাংলাদেশকে অনুরোধ জানিয়েছে ভারত। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীরা অন্তর্বর্তী চুক্তি সইয়ের রূপরেখা তৈরি এবং তথ্য–উপাত্ত বিনিময়ের লক্ষ্যে বাড়তি কয়েকটি নদী যুক্ত করতে যৌথ নদী কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন। শেখ হাসিনা অতীতের আলোচনাগুলোর কথা স্মরণ করিয়ে তিস্তার অন্তর্বর্তী পানি চুক্তি সইয়ের জন্য বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের অনুরোধ পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
প্রসঙ্গত, চার দিনের সফরে প্রধানমন্ত্রী সোমবার (৫ আগস্ট) দিল্লি পৌঁছেন। মঙ্গলবার তার সঙ্গে মোদির বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতি দেন তারা।