প্রধানমন্ত্রী

যুবসমাজ আমাদের বড় শক্তি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

শত বাধা অতিক্রম করে দেশ এগিয়ে যাবে, এমন প্রত্যাশার কথা ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যুবসমাজ আমাদের বড় একটা শক্তি। পৃথিবীর অনেক দেশ এখন বয়োবৃদ্ধদের দেশে পরিণত হয়েছে। আমরা সেটা হতে চাই না। আমাদের যুবসমাজই পারবে দেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে।’
সামাজিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদানের জন্য ১১ জন ব্যক্তিকে ‘শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন।
রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানী ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল তাদের হাতে সম্মাননা তুলে দেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। পুরস্কারপ্রাপ্ত ১১ জনের প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা এবং সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়েছে।
এসময় প্রধানমন্ত্রী পুরস্কারপ্রাপ্তদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আমি মনে করি, পুরস্কারপ্রাপ্তদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে সবাই মানুষের কল্যাণে কাজ করবে। এভাবে সারাদেশের তরুণ সমাজ এগিয়ে আসুক এটাই আমি চাই।’
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তরুণ সমাজের জন্য সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘(১৯৯৬ সালে) সরকারে আসার পর আমাদের লক্ষ্যই ছিল, দেশের যুব সমাজকে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। তখনকার যুগে কেউ কম্পিউটার শিখতো না, কম্পিউটার ছিলই না। দুই-চারটা অফিসে হয়তো ডেস্কটপ সাজানো থাকতো, কিন্তু কেউ ব্যবহার করতো না। আমিই উদ্যোগ নিয়েছিলাম যে, প্রথমেই প্রযুক্তি শিক্ষা দিতে হবে।’
সেসময় বিজ্ঞান বা কারিগরি শিক্ষায় মাত্র ৭ শতাংশ ছেলেমেয়ে সম্পৃক্ত ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে কারণে আমি ১২টা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নেই। কারিগরি শিক্ষার উপর গুরুত্ব দেই। সেই সঙ্গে সামাজিক বিভিন্ন কার্যক্রমে যেন যুব সমাজ সম্পৃক্ত হয় তার ব্যবস্থা করি। একই সঙ্গে আমাদের যুব সমাজ বেকারত্বের হাত থেকে যেন মুক্তি পায়, সে জন্য সমাজের সবকিছু আমি বেসরকারি খাতে উন্মুক্ত করে দেই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘টেলিভিশন থেকে শুরু করে ব্যাংক, বিমাসহ যা যা কিছু আছে, বেসরকারি খাতে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। উদ্দেশ্যটা হচ্ছে, যত বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। সেটার দিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা পদক্ষেপটা নিয়েছিলাম।’
অনুষ্ঠানে সামাজিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদানের জন্য পাঁচটি ক্যাটাগরির ১১ জনকে সম্মাননা দেওয়া হয়। এরমধ্যে যুব উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান ক্যাটাগরিতে অসাধারণ অবদানের জন্য এবছর সম্মাননা পেয়েছেন, শরীয়তপুরের বাসিন্দা মাসুম আলম এবং নেত্রকোণার বাসিন্দা কামরুন নাহার লিপি। আর শিক্ষা, বিজ্ঞান, তথ্যপ্রযুক্তি ও কারিগরি ক্যাটাগরিতে অসাধারণ অবদানের জন্য সম্মাননা পেয়েছেন জাগো ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক করভি রাকসান্দ দ্রুব এবং পেন ফাউন্ডেশনের মেঘনা খাতুন।
দেশপ্রেম, বীরত্ব ও সাহসিকতার ক্ষেত্রে অবদানের জন্য সম্মাননা পেয়েছেন, রাঙ্গামাটির বাসিন্দা এন কে এম মুন্না তালুকদার এবং লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা রাজু আহমেদ। জ্যেষ্ঠদের প্রতি আদর্শ সেবা বা সমাজকল্যাণে অবদানের জন্য বরিশালের বাসিন্দা মিল্টন সমাদ্দার এবং সুনামগঞ্জের বাসিন্দা কাস্মিরুল হক সম্মাননা পেয়েছেন। আর ক্রীড়া, কলা (চারু ও কারু) ও সংস্কৃতিতে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য সম্মাননা পেয়েছেন জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক শেরপুরের মেয়ে নিগার সুলতানা জ্যোতি এবং রাজশাহীর বাসিন্দা মোস্তফা সরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *