আন্তর্জাতিক

মহামারীর পরে উদ্ভাবনায় বিনিয়োগ একটি ঝুঁকি অতিক্রম করছে : জাতিসংঘ

উন্নয়নশীল দেশগুলিতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি কোভিড-১৯ মহামারী চলাকালীন উদ্ভাবনের জন্য তহবিল বৃদ্ধি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ বলেছে, যদিও বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা অগ্রগতির জন্য হুমকি হয়ে উঠছে।
জাতিসংঘের বিশ্ব মেধাস্বত্ব সংস্থা’র (ডব্লিউআইপিও) এক নতুন গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গবেষণা ও উন্নয়ন ব্যয় এবং অন্যান্য বিনিয়োগ যা অব্যাহত উদ্ভাবনী কার্যক্রম পরিচালনা করে বিক্ষিপ্ত মহামারী সত্ত্বেও গত বছর প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছে।
‘এটি আমরা যা আশা করেছিলাম তার বিপরীত, এ কথা উল্লেখ করে ডব্লিউআইপিও প্রধান ড্যারেন ট্যাং সাংবাদিকদের বলেছেন, পূর্ববর্তী মন্দার সময় উদ্ভাবন ব্যয় হ্রাস পেয়েছে। কিন্তু বিশ্বব্যাপী মহামারির স্বাস্থ্য সঙ্কট ‘সম্পূর্ণ নতুন এলাকায়’ উদ্ভাবন ব্যয়ের উত্থান ঘটায় এবং এমন অঞ্চলে যেগুলি সাধারণত এই ধরনের বিনিয়োগের একটি বড় অংশ সাধারণত পায় না।
শীর্ষ কর্পোরেট ব্যয়কারীদের গবেষণা এবং উন্নয়ন বিনিয়োগ ২০২১ সালে প্রায় ১০ শতাংশ বেড়ে ৯শ’ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যায়, যা মহামারীর আগের চেয়ে বেশি। এসব বিনিয়োগ বেশিরভাগ ফার্মাসিউটিক্যালস, জৈব প্রযুক্তি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে হয়েছে।
ডব্লিউআপিও বলেছে, গত বছর ভেঞ্চার ক্যাপিটাল (ভিসি) লেনদেন প্রায় ৫০ শতাংশ ‘ফেঁপে’ উঠেছে, ১৯৯০ এর দশকের শেষের দিকে ইন্টারনেট বুম বছরের তুলনায় রেকর্ডিং মাত্রায় বেশী।
লাতিন আমেরিকা, ক্যারিবিয়ান এবং আফ্রিকান অঞ্চলে সর্বাধিক বৃদ্ধি দেখা গেছে।
ডব্লিউআপিও এও সতর্ক করেছে যে, উদ্ভাবনী কার্যক্রমের তহবিল বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে সাধারণত যে উৎ্পাদনশীলতা অনুসরণ করা হয় তা স্থবির হয়ে পড়েছে বলে মনে হচ্ছে।
ট্যাং বলেন,‘বৈশ্বিক উদ্ভাবন অর্থনীতি এই বছর একটি মোড়ের মধ্যে আছে।
‘যদিও ২০২০ এবং ২০২১ সালে উদ্ভাবন বিনিয়োগ বেড়েছে, ২০২২-এর দৃষ্টিভঙ্গি কেবল বিশ্বব্যাপী অনিশ্চয়তার কারণে নয় বরং উদ্ভাবন-চালিত উৎপাদনশীলতার ক্রমাবনতিতে ঘটছে।
জাতিসংঘের সংস্থা বলেছে, বিশ্বের সবচেয়ে উদ্ভাবনী দেশগুলির বার্ষিক র‌্যাংকিংয়ে সুইজারল্যান্ড ১২ তম বছরের জন্য তালিকার শীর্ষে রয়েছে।
কিন্তু গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্স ২০২২ ইঙ্গিত দিয়েছে যে, উদ্ভাবন অর্থনীতি -যা দীর্ঘকাল ধরে উত্তর আমেরিকা এবং পশ্চিম ইউরোপে ব্যাপকভাবে কেন্দ্রীভূত হয়েছে- ধীরে ধীরে তা বৈচিত্র্যময় হচ্ছে।
সপ্তম অবস্থানে সিঙ্গাপুর বাদে শীর্ষ ১০টি দেশ হিসেবে এখনও পশ্চিমা দেশগুলিকে গণনা করা হয়, কিন্তু চীন দ্রুতগতিতে এগিয়ে গত বছর ১২ তম থেকে ১১ তম স্থানে পৌঁছেছে এবং এক দশক আগে ৩৪ তম অবস্থানে ছিল।
ভারত এবং তুরস্ক উভয়ই র‌্যাংকিংয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে অগ্রগতি অর্জন করেছে। উভয় দেশ প্রথমবারের মতো শীর্ষ ৪০-এ উঠেছে।
জাতিসংঘের সংস্থাটি ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, কেনিয়া, ব্রাজিল এবং জ্যামাইকাসহ বেশ কয়েকটি উন্নয়নশীল দেশ কীভাবে তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্তরের সাথে সম্পর্কিত উদ্ভাবন সূচকে ‘প্রত্যাশিত অবস্থানে ঊর্ধ্বে’ কাজ করেছে তাও তুলে ধরেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *