বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যুবকরাই দেশকে এগিয়ে নেবে
বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যুবকরাই দেশকে এগিয়ে নেবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে যুবকরাই অস্ত্র হাতে নিয়েছিল। আমরা বীরের জাতি। আমাদের বীরের জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে চলতে হবে। কারও কাছে মাথা নত করা যাবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, করোনার সময় আমি দেখেছি, চিকিৎসাসেবা থেকে শুরু করে সব কাজে যুবকরাই এগিয়ে এসেছে। এটা কিন্তু গর্বের বিষয়। নতুন নতুন আবিষ্কারের মাধ্যমে বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। এটা আমাদের যুবকরাই করবে। আমাদের যুবকরা এত বেশি মেধাবী যে তারা সব কাজে অবদান রাখতে পারবে।
মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) ‘জাতীয় যুব দিবস-২০২২’-এর উদ্বোধন এবং ‘জাতীয় যুব পুরস্কার-২০২২’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে তিনি ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। মূল অনুষ্ঠানটি রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
‘প্রশিক্ষিত যুব উন্নত দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে পালিত হচ্ছে এবারের জাতীয় যুব দিবস।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুব উন্নয়ন কেন্দ্র লেখা থাকে জাতীয় যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে। সেখানে আমি নিজে গিয়েছিলাম, দেখেছিলাম দুরবস্থার চিত্র। সরকার গঠন করে সেগুলোকে আমরা উন্নত করেছি। বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত যুবকদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেছি। তারা নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। তাদের সফলভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা যাতে হয় সেদিকে বিশেষভাবেই নজর রাখছি।
সরকারপ্রধান বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ডাকে এদেশে লাখো মানুষ অস্ত্র তুলে নিয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে যুবকরা জাতির পিতার ডাকে উদ্বুদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে জীবন বাজি রেখে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল যুবকরা। সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের মাধ্যমে লাল-সবুজের একটি নতুন দেশ সৃষ্টি করে এ দেশের যুবসমাজ। যুবাদের তিনি সংগঠিত করেছিলেন দেশপ্রেমের মহান দীক্ষায়। জাতির পিতা স্বাধীনতা অর্জনের পর দেশ পুনর্গঠনেও যুবসমাজকে কাজে লাগান এবং শিক্ষিত ও কর্মদক্ষ যুবসমাজ সৃষ্টিতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং রূপরেখা প্রণয়ন করেন। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা বিরোধীচক্র জাতির পিতাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর বাংলাদেশের যুবসমাজকে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলার পথে ঠেলে দেওয়ার অপচেষ্টা চালায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে যুবসমাজকে উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করতে দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে। পরে ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়লাভের পর থেকে সরকার যুবসমাজকে দক্ষ মানবসম্পদে উন্নীত করতে তথ্য প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন কারিগরি, বৃত্তিমূলক এবং কৃষিভিত্তিক বহুমুখী প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, যুব ও ক্রীড়া সচিব মেজবাহ উদ্দিন, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (গ্রেড-১) আজহারুল ইসলাম খান।
এদিকে অনুষ্ঠানে আত্মকর্মসংস্থানে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপনের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৫ জন আত্মকর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবায় অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য ছয়জন যুবসংগঠক অর্থাৎ মোট ২১ জন সফল যুবাকে জাতীয় যুব পুরস্কার-২০২২ দেওয়া হয়েছে।