জাতীয়জাতীয় সংবাদশীর্ষ সংবাদ

‘বিএনপি ১০ তারিখে লালকার্ড পেয়েছে, ৩০ ডিসেম্বর ঘোড়ার ডিম পাবে’

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জনগণ বিএনপিকে ১০ তারিখে লালকার্ড দেখিয়ে দিয়েছে। তারা পেয়েছে অশ্বডিম্ব। ৩০ ডিসেম্বরেও ঘোড়ার ডিম পাবে। যদি তারা সফল হয়, সেদিন ঘোড়া ডিম পারবে।

তবে ২৪ ডিসেম্বরের গণমিছিল আওয়ামী লীগের সম্মেলনের কারণে পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর নেওয়ায় বিএনপিকে ধন্যবাদ জানান তিনি। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীতে আওয়ামী লীগের ‘বিজয় শোভাযাত্রা’য় তিনি এই কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ আন্দোলনে খেলবে। নির্বাচনেও খেলবে। সেমিফাইনাল সামনে। তারপর ফাইনাল। ফাইনালের আন্দোলনেও বিএনপি হারবে। নির্বাচনেও হারবে।

আওয়ামী লীগের বিজয় শোভাযাত্রাআওয়ামী লীগের বিজয় শোভাযাত্রা

আন্দোলন-নির্বাচনে বিএনপিকে পরাজিত করতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, আমি এখানে এসেছি মোটরসাইকেলে করে। ঢাকায় শুধু স্লোগান, আর স্লোগান। বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, শীতলক্ষার সব ঢেউ ঢাকা মহানগরীতে।

শোভাযাত্রায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রাজ্জাক বলেন, মানুষ শেখ হাসিনাকে দেশ পরিচালনা করার জন্য দায়িত্ব দিয়েছে। আগামী নির্বাচন পর্যন্ত তিনি ক্ষমতায় থাকবেন। পৃথিবীর কোনও শক্তি ষড়যন্ত্র করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারবে না। নির্বাচনে জনগণ ভোট না দিলে আমরা সালাম করে চলে যাব।

দলটির প্রেসিডিয়ামে আরেক সদস্য শাজাহান খান বলেন, এই শিকড় অনেক শক্তিশালী। আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার জন্য বিএনপি-জামায়াত ভেংচি মারে। আমরা কোনও বানরের ভেংচিতে ভয় পাই না। তার জবাব জনগণকে সঙ্গে নিয়েই আওয়ামী লীগ দেবে।

আওয়ামী লীগের বিজয় শোভাযাত্রাআওয়ামী লীগের বিজয় শোভাযাত্রা

দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি, শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি দাবি করে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামে আরেক সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, তাদের রাজনৈতিকভাবে নিশ্চিহৃ করতে হবে। যতদিন এসব শক্তি রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে সক্রিয় থাকবে, ততদিন এই দেশের সমস্যার সৃষ্টি হবে, ষড়যন্ত্র হবে। উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে। জাতিকে শপথ নিতে হবে একাত্তর সালে যেভাবে পাকিস্তানিদের দোসরদের পরাজিত করে বিজয়ের পতাকা উড়িয়েছিলাম, ঠিক তেমনিভাবে পাকিস্তানিদের দোসর বিএনপি-জামায়াতকে নিশ্চিহ্ন করে বিজয় পতাকা উড়িয়ে যাব।

আওয়ামী লীগের আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ১০ ডিসেম্বর বিএনপি পরাজিত হয়েছে। সেদিনই ২৪ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে যে জাতীয় নির্বাচন হবে তার ফয়সালা হয়ে গেছে। এই ধারাবাহিকতায় আগামী নির্বাচনেও তারা পরাজিত হবে। ১০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের বিজয়ের মাধ্যমে ২০২৪ সালের নির্বাচনের বিজয়ও সূচিত হয়েছে।

আওয়ামী লীগের বিজয় শোভাযাত্রাআওয়ামী লীগের বিজয় শোভাযাত্রা

দুপুর আড়াইটায় শোভাযাত্রাটি রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন থেকে শুরু হয়। শাহবাগ, এলিফ্যান্ট রোড, সায়েন্স ল্যাব, কলাবাগান হয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয় এটি। এতে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

মিছিলকারীদের অনেক লাল-সবুজসহ বিভিন্ন রঙের পোশাক পরে ব্যান্ড পার্টি, জাতীয় পতাকা, দলীয় পতাকাসহ অংশ নেন। উৎসবের আমেজে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে শোভাযাত্রা নিয়ে এগিয়ে যান তারা। মিছিলের জন্য কারণে শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে মৎস্যভবন থেকে কাটাবন সড়কের যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে প্রেসক্লাব থেকে মৎস্যভবন সড়কের যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ প্রমুখ।

আওয়ামী লীগের বিজয় শোভাযাত্রায় কেন্দ্রীয় নেতারাআওয়ামী লীগের বিজয় শোভাযাত্রায় কেন্দ্রীয় নেতারা

মিছিলে নেতৃত্ব দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। মহানগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগের নেতাকর্মীদের লাল-সবুজে সজ্জিত হয়ে এতে অংশ নেন।

দুপুর থেকেই শোভাযাত্রায় অংশ নিতে ঢাকার বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিট থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন ও এর আশপাশের জড়ো হতে থাকেন। লাল-সবুজ পোশাক পরে, ডাকঢোল পিটিয়ে, বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে এই কর্মসূচিতে যোন দেন তারা।

এই কর্মসূচির কারণে সংশ্লিষ্ট সড়কগুলোতে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় সাময়িকভাবে যানজট তৈরি হয়। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমদ মান্নাফি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিজয় শোভাযাত্রায় লাখো মানুষের উপস্থিতির কারণে কিছুটা ভোগান্তি হয়েছে, এটা ঠিক। মানুষের ভোগান্তি কমাতে শনিবার এই কর্মসূচি পালন করা হয় এবং বিকল্প রুটে গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা ছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *