জাতীয়জাতীয় সংবাদশীর্ষ সংবাদ

বিএনপি কি গাড়ি ও মানুষের সম্পত্তি পোড়ানোর অধিকার চায়- প্রশ্ন তথ্যমন্ত্রী’র

বিএনপি অবাধে গাড়িঘোড়া ও মানুষের সম্পত্তি পোড়ানোর অধিকার চায় কিনা এমন প্রশ্ন রেখেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী  এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব সকালে একবার সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন, বিকেলে একবার করেন, আবার মাঝেমধ্যে সন্ধ্যাবেলায়ও করেন। তাদের নেতৃবৃন্দ সারাদেশে ঘুরে ঘুরে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ করছেন। তারা রাজনৈতিক স্বাধীনতা এর চেয়ে বেশি কি চান? তারা কি অবাধে গাড়িঘোড়া ও মানুষের সম্পত্তি পোড়ানোর অধিকার চান?  ওনারা কি দিনের পর দিন হরতাল ডেকে মানুষকে অবরুদ্ধ করে রাখতে চান, যা ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে করেছেন, যেগুলো মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে।’
মন্ত্রী আজ সন্ধ্যায় মুক্তিযুদ্ধকালীন পাক-হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ চট্টগ্রামের তৎকালীন পুলিশ সুপার শামসুল হকের বীরত্বগাথা অবলম্বনে নির্মিতব্য পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘দামপাড়া’ এর শুভ মহরত অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রামের দামপাড়া পুলিশ লাইনের মাল্টিপারপাস হলে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভির। উপ-পুলিশ কমিশনার বিজয় বসাকের পরিচালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, ‘দামপাড়া’ ছবির নায়ক ফেরদৌস খান, নায়িকা হাসনে হাবীব ভাবনা, চলচ্চিত্রটির সংলাপ-রচয়িতা আনন জামান, পরিচালক শুদ্ধমান চৈতন, মুক্তিযুদ্ধকালে শহীদ সাবেক এসপি শামসুল হকের সহধর্মীনি মাহমুদা হক চৌধুরী প্রমুখ।
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি যদি রাজপথেই বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চান, তাহলে সরকারের কাছে কেন আবেদন জানান তাকে বিদেশ পাঠানোর জন্য। এই দ্বি-চারিতা তো পরিহার করা উচিত তাদের। গাড়ি পোড়ানো এবং মানুষকে জিম্মি করে বোমা নিক্ষেপ করার হুকুমের মামলার আসামি হওয়া সত্ত্বেও যে ধরণের রাজনৈতিক স্বাধীনতা তারা ভোগ করছেন, সরকার এবং আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বিষোদগার করছেন, অন্য কোন দেশে এতটুকু করতে পারতেন কিনা সেটি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী  বলেন, বেগম খালেদা জিয়া একজন দন্ডপ্রাপ্ত আসামি, প্রধানমন্ত্রী মহানুভবতা দেখিয়ে তার দন্ড স্থগিত রেখে তাকে মুক্ত রেখেছেন এবং তিনি তার মতো করেই অর্থাৎ তার পরিবার এবং দলের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। সরকারের অধীনে তিনি চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন না। সুতরাং বেগম খালেদা জিয়ার যদি এখন স্বাস্থ্যের কোন হানি হয়, এটির জন্য দায়ী হবে বিএনপি এবং তার পরিবারের যারা চিকিৎসক এবং যারা তার স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন তারা।
এর আগে মহরত অনুষ্ঠানে  হাছান মাহমুদ বলেন, দামপাড়া জায়গাটি একটি ঐতিহাসিক জায়গা, ১৯৩০ সালে এখানেই ছিল চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার, মাস্টারদা সূর্যসেন তার বিপ্লবী বাহিনীকে নিয়ে এই অস্ত্রগার লুণ্ঠন করে চট্টগ্রাম অঞ্চলকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে ১১ দিন স্বাধীন রেখেছিলেন। সেই ইতিহাস কিন্তু সবাই জানে না।
তিনি বলেন, দামপাড়ায় ১৯৩০ সালের ঘটনা আর ১৯৭১ সালের ঘটনার মধ্যে একটি বৈপরিত্য আছে। সেই বৈপরিত্যটা হচ্ছে, ১৯৩০ সালে এখান থেকে অস্ত্র লুণ্ঠন করতে হয়েছিল, অস্ত্র লুণ্ঠন করে বিপ্লবীরা ব্রিটিশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলকে তারা ১১ দিন স্বাধীন রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। অন্যদিকে  ১৯৭১ সালে লুণ্ঠন করতে হয়নি। বরং অস্ত্রাগারের যিনি রক্ষক ছিলেন পুলিশ সুপার শামসুল হক অস্ত্রগুলো বিতরণ করে দিয়েছিলেন বীর  মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *