শিক্ষা

বই উৎসব: গোপালগঞ্জে ৬ লাখ সাড়ে ৮৬ হাজার বই বিতরণ করা হবে

জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬ লাখ ৮৬ হাজার ৬৫৭টি বই বিতরণ করা হবে।
আগামী ১ জানুয়ারি বই উৎসবের দিনে প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি থেকে শুরু করে ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে এসব বই বিনামূল্যে তুলে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে জেলার ৫ উপজেলার বিদ্যালয় সমূহে বই পৌঁছে গেছে। বিদ্যালয়গুলো বই বিতরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিখিল চন্দ্র হালদার বলেন, এ জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় সমূহে ৬ লাখ ৮৬ হাজার ৬৫৭টি বইয়ের চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে প্রাক প্রথমিক শ্রেণির ২৮ হাজার ৫০২ টি বই, প্রথম শ্রেণির ৮৭ হাজার ১৫৯টি বই, দ্বিতীয় শ্রেণির ৮৫ হাজার ১৫৫টি বই, তৃতীয় শ্রেনির ১ লাখ ৬৫ হাজার ৩৯০ টি বই, চতুর্থ শ্রেণির ১ লাখ ৬৫ হাজার ২৭০টি বই, পঞ্চম শ্রেণির ১ লাখ ৫৫ হাজার ৯৪০টি বই আমরা পেয়েছি। ইতিমধ্যে আমরা বইগুলো উপজেলায় পাঠিয়েছি। উপজেলা থেকে বইগুলো বিদ্যালয় সমূহে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এখন বই উৎসবের দিনে ১জানুয়ারি আমরা শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে ৬ লাখ ৮৬ হাজার ৬৫৭টি বই বিতরণ করব। আমরা এ ব্যাপারে প্রায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি।
গোপালগঞ্জ শহরের এস.এম মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরাইয়া খানম বলেন, আমার বিদ্যালয়ে প্রায় ১ হাজার ৪০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। আমাদের স্কুলে শিক্ষার্থীদের চাহিদার সব বই এসে পৌঁছেছে। আগামী ১ জানুয়ারি আমাদের বিদ্যালয়ে জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বই উৎসবের উদ্বোধন করবেন। বই উৎসব উদযাপনের আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। ওই দিনই আমরা সব শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দিতে পারব। শিক্ষার্থীরা নতুন বছরে নতুন বই নিয়ে ক্লাস করতে পারবে। নতুন বই পেলে শিক্ষার্থীদের আনন্দের সীমা থাকে না।
এস.এম মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী সৃজিতা সিকদারের ও তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সৃজন সিকদারের পিতা সঞ্জয় সিকদার বলেন, সরকার শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই দিচ্ছে। নতুন বই পেয়ে আমার ছেলে-মেয়েরা আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠে। গভীর আগ্রহে বইয়ের পাতা উল্টে দেখে। নতুন বই নিয়ে তাদের জানুয়ারি মাস ভালই কাটে। এতে আমার ছেলে-মেয়ের জন্য বই কেনা লাগছে না। শিক্ষা খরচ সরকার অনেকটাই সাশ্রয় করে দিয়েছে। এছাড়া আমার মেয়েকে সরকার উপবৃত্তি দিচ্ছে। এতে তার পড়াশোর প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
শহরের উত্তর গোপালগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী অনিক শীলের পিতা অমর কান্তি শীল বলেন, আমাদের সময়ে সরকার এভাবে বিনামূল্যে বই দিত না। পরিবার থেকে পড়াশোনার খরচ চালাতে পারত না। তাই আমি লেখাপড়া শিখতে পারনি। ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করিয়েছি। সরকার বই দিচ্ছে। এছাড়া সব ধরণের সহযোগিতা করছে। এমনকি ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা সরকার চালিয়ে নিচ্ছে। এ কারণে আমার মতো আমার ছেলের পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার কোন সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই।
গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্র লীগের সভাপতি নিউটন মোল্লা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার শিক্ষা বান্ধব সরকার। এ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষাবিস্তারে নানামুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। তিনি শিক্ষক্ষেত্রে বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি করেছেন। বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিচ্ছেন। শিক্ষিত জনগোষ্ঠি গড়ে তুলতে তিনি সবধরণের সহযোগিতা করছেন। প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক চেষ্টায় বিগত ১৫ বছরে দেশে শিক্ষার হার বৃদ্ধি পেয়েছে। শিক্ষিত জনগোষ্ঠি দেশের সম্পদে পরিনত হয়েছে। তারা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে কাজ করছে। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমি ধন্যবাদ জানাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *