শোক দিবসে নিশ্ছিদ্র ও সুসমন্বিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা : ডিএমপি কমিশনার
আগামিকাল ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদত বার্ষিকী।
এদিন বাংলাদেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশাজীবীর মানুষ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এ উপলক্ষ্যে ঢাকা মহানগরী জুড়ে নিশ্ছিদ্র ও সুসমন্বিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
আজ রোববার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর কেন্দ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা জানান।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঢাকা মহানগর জুড়ে জাতীয় শোক দিবসের যে কর্মসূচি থাকবে সেটি যাতে যথাযথ মর্যাদা ও ভাব গাম্ভীর্যের সাথে উদযাপিত হয়, সেই ব্যাপারে অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সমন্বয় করে মহানগরী জুড়ে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কমিশনার বলেন, গোয়েন্দা সংস্থা যেমন এসবি, এটিইউ, এনএসআই, ডিজিএফআই কারও নিকট থেকে এখন পর্যন্ত জঙ্গি হামলা হুমকির কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।
১৫ আগস্টে শাহাদত বরণকারী জাতির পিতাসহ সকল শহীদের প্রতি বিন¤্র শ্রদ্ধা জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আগস্ট আমাদের শোকের মাস। ১৫ আগস্টের কাল রাতে আমাদের স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। এটি অত্যন্ত কষ্ট ও শোকের সাথে পালন করার জন্য ঢাকাবাসী হাজার হাজার মানুষ ৩২ নম্বরে আসে। স্বাধীনতা যুদ্ধের অব্যবহিত পূর্বে মানুষের ঠিকানা ছিল এই ৩২ নাম্বার। ঠিক একইভাবে এই শোক দিবসে সমস্ত মানুষের ঠিকানা এ ৩২ নম্বর।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে ডিএমপির গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, নিñিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ডিএমপির পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু জাদুঘর ও বনানী কবরস্থান পুরো এলাকা থাকবে সিসিটিভির আওতায়, যা লাইভ মনিটরিং করা হবে। ধানমন্ডি ৩২ ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা প্রত্যেককে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশি চেকপোস্ট ও আর্চওয়ে গেটের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। এক্ষেত্রে নগরবাসীকে কর্তব্যরত পুলিশকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর এবং বনানী কবরস্থানসহ জনসমাগম হওয়ার সম্ভাব্য স্থানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ইউনিফর্ম পুলিশের পাশাপাশি সোয়াট, বোম্ব ডিসপোজল ও সাদা পোশাকেও মোতায়েন থাকবে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ। মেটাল ডিটেক্টর ও ডগ স্কোয়াড দিয়ে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর এবং বনানীর কবরস্থান সুইপিং করা হবে। ধানমন্ডি লেকে থাকবে নৌ পুলিশ ও নৌ বাহিনীর টহল বোট। যেকোন পরিস্থিতি সরেজমিনে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অস্থায়ী সাব কন্ট্রোল রুমে সিনিয়র অফিসাররা সার্বক্ষণিক অবস্থান করবেন।
জাতীয় শোক দিবসে নিরাপত্তার স্বার্থে ধানমন্ডি ৩২ ও বনানী কবরস্থান সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত হোটেল, গেস্ট হাউজ এবং মেসগুলোতে পুলিশের নজরদারী বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া কোন ধরনের ব্যাকপ্যাক বা টিফিন ক্যারিয়ার না নিয়ে আসার অনুরোধ করেন তিনি।
কোভিডের সংক্রমণ প্রতিরোধে সকলকে মাস্ক পরিধান ও রাসেল স্কয়ার থেকে পায়ে হেঁটে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে পশ্চিম দিক দিয়ে বের হওয়ার অনুরোধ করেন তিনি।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) মীর রেজাউল আলম, বিপিএম(বার), অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) এ কে এম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) সৈয়দ নুরুল ইসলামসহ যুগ্ম পুলিশ কমিশনার ও উপ পুলিশ কমিশনারগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।