দায়িত্ব পেয়েই মাঠ কর্মকর্তাদের আইজিপির কঠোর বার্তা
পেশাদারিত্ব ও নিরপেক্ষতা সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে জনগণের সেবাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে মাঠ কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশনা দিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
তিনি বলেন, মানুষ পুলিশের সেবা পেতে প্রথম থানায় আসে। থানার দরজা কখনো বন্ধ হয় না। আমরা থানাকে মানুষের সেবা প্রাপ্তির প্রথম ভরসাস্থল হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
মঙ্গলবার আইজিপি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে ভার্চুয়ালি পুলিশের সকল মেট্রোপলিটন কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, জেলার পুলিশ সুপার এবং থানার অফিসার ইনচার্জদের (ওসি) সাথে প্রথম মতবিনিময় সভায় বক্তব্য প্রদানকালে এ নির্দেশ দেন।
সভায় অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মো. কামরুল আহসান ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের অতিরিক্ত আইজিপিরা এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ প্রধান বলেন, কিছু পুলিশ সদস্যের বিচ্যুত আচরণের জন্য পুলিশের সম্মান ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়, তা কোনভাবেই করা যাবে না। কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অনৈতিক কাজ অথবা দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, কোন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মাদকের সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্স।
করোনাকালে চরম বিপর্যয়ের সময় মানবিক পুলিশিংয়ের উদাহরণ দিয়ে আইজিপি বলেন, তখন পুলিশ যেভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, তাদেরকে সেবা দিয়েছে তা জনগণ আজীবন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। আগামীতেও পুলিশ সদস্যদেরকে আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে সেবার এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
তিনি বলেন, জাতির পিতার ‘জনগণের পুলিশ’ হিসেবে পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করে আমাদেরকে অতীতের ন্যায় অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করার চ্যালেঞ্জ নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
জঙ্গিবাদ প্রসঙ্গে আইজিপি বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ এখন ‘রোল মডেল’। জঙ্গিবাদ দমনে আমাদের কার্যক্রম আগামীতে আরও জোরদার করতে হবে।
পুলিশ প্রধান বলেন, পুলিশের নিয়োগ-পদোন্নতিতে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। ফলে জনগণের মধ্যে পুলিশের প্রতি আস্থা বেড়েছে। এখন যেকোনো সময়ের তুলনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক উন্নত। এটা ধরে রাখতে হবে। সকলে মিলে একযোগে একসাথে কাজ করে বাহিনীর মর্যাদা সমুন্নত রাখতে হবে।
পুলিশ সদস্যদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরকারি নির্দেশনা যথাযথভাবে প্রতিপালনের নির্দেশ দিয়ে আইজিপি বলেন, পুলিশের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য তথ্য-প্রযুক্তি এবং নিত্য নতুন আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন করে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা হবে। মামলা তদন্তে প্রযুক্তির নির্ভরতা বাড়ানো হবে।
পুলিশ সদস্যদের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিতের নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, কল্যাণের পাশাপাশি শৃঙ্খলাও শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অপচেষ্টা করলে তা কঠোরভাবে মোকাবিলা করতে হবে।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিভিন্ন সামাজিক সূচকে অনেক এগিয়েছে। ২০৪১ সালের উন্নত দেশের উপযোগী পুলিশ গড়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাব। আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।