কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ কাজের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার লক্ষ্যে রানওয়ে সম্প্রসারণ কাজের উদ্বোধন করেছেন।
তিনি আজ সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কক্সবাজার বিমানবন্দরের সঙ্গে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে এই উদ্বোধন করেন।
সমুদ্র তীরবর্তী জমি পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ করে নতুন এই ১০ হাজার ৭০০ ফুট রানওয়ে হবে, যার ফলে, আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের বোয়িং ৭৭৭ ও ৭৪ এর মতো বড় আকারের উড়োজাহাজগুলো এই বিমানবন্দরে অবতরণ করতে পারবে এবং এখানে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করার পথ সুগম হবে। প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটকরা সরাসরিই কক্সবাজারে আসতে পারবেন।
১ হাজার ৫৬৮ দশমিক ৮৬ কোটি টাকার এই প্রকল্পটি ২০২৪ সালের মে মাসে সম্পন্ন হবার কথা থাকলেও এর আগেই এটি সম্পন্ন করা হবে এবং নিজস্ব অর্থায়নে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর সরকার প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়।
সিএএবি চীনের চ্যাংজিয়াং ইচ্যাং ওয়টারওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যুরো (সিওয়াইডব্লিউইবি) ও চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সস্ট্রাকশন কর্পোরেশন (সিসিইসিসি)’র সাথে চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি এই প্রকল্পের একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।
সিএএবি কর্মকর্তারা জানান, বিস্তারিত নকসা এবং সাইট অফিস, সড়ক নেটওয়ার্ক ও জেটির মতো অস্থায়ী স্থাপনাগুলোর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রীর ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপনের পর প্রকল্পটির মূল নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
বাসসের কক্সবাজার সংবাদদাতা জানান, শনিবার দুপুরে কক্সবাজার বিমান বন্দরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে কক্সবাজার বিমান বন্দর হবে বিশ্বের সাগর উপকূলে অবস্থিত দৃষ্টিনন্দন বিমান বন্দরগুলোর অন্যতম এবং এটিই হবে দেশের দীর্ঘতম রানওয়ে।
বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ৬ মে কক্সবাজার বিমান বন্দরে বোয়িং-৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজ উড্ডয়ন-অবতরণ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। তখন আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার জন্য বিমান বন্দরটির রানওয়েকে সম্প্রসারণের নির্দেশ দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে কক্সবাজার বিমান বন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর ঘোষণা করা হয়। প্রথমে রানওয়ের দৈর্ঘ্য ৬ হাজার ৭৭৫ ফুট থেকে ৯ হাজার ফুটে এবং প্রস্থ ১২০ ফুট থেকে ২০০ ফুট করা হয়। এখন এটিকে ১০ হাজার ৭০০ ফুটে উন্নীত করার কাজ চলছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৩০০ ফুট থাকবে সমুদ্রের মধ্যে। মহেশখালী চ্যানেলের দিকে সম্প্রসারিত হচ্ছে এই রানওয়ে।
এতে বিমান বন্দরে যাত্রী পরিবহণ ক্ষমতাও বাড়বে। বৃদ্ধি পাবে ফ্লাইট অপারেশনের সংখ্যা। ভবিষ্যতে কক্সবাজার সংলগ্ন মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়ার মতো দেশের বড় বড় এয়ারলাইন্সের এয়ারক্রাফটও অবতরণ করতে পারবে কক্সবাজারে। আগামী ৫০ বছরের চাহিদা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাস্তবায়ন হচ্ছে এই প্রকল্প।
কক্সবাজার প্রান্তে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান এবং সিভিল এভিয়েশন অথোরিটি অব বাংলাদেশ (সিএএবি)’র চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।