রাষ্ট্রপতিকে আইন প্রণয়নসহ ৫-দফা ও প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাবনা সাম্যবাদী দলের
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সাথে সংলাপে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের লক্ষ্যে আইন প্রণয়নসহ পাঁচ-দফা প্রস্তাবনা বামপন্থী সংগঠন বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের। রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে রাস্ট্রপতির চলমান সংলাপের নবম দিনে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে শাসনতন্ত্র মোতাবেক একটি নির্বাচনকালীন সরকার গঠনেরও প্রস্তাব দেন এই দলটি।
সংলাপের অংশ হিসেবে আজ সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটের অন্যতম শরিক সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড দিলীপ বড়–য়ার নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বঙ্গভবনের দরবার হলে আলোচনায় বসেন।
সংলাপ শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মোঃ জয়নাল আবেদীন বাসসকে জানান, একটি নিরপেক্ষ, সক্ষম, শক্তিশালী, দক্ষ ও যোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য একটি স্থায়ী আইন প্রণয়নসহ পাঁচ-দফা প্রস্তাবনা দেন রাষ্ট্রপতির কাছে। তারা আইনের অনুপস্থিতিতে সার্চ কমিটি গঠন করতে হলে সাংবিধানিক সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে একটি কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব করেন।
তারা রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার উদ্যোগ নেয়ার জন্য রাষ্ট্রপতিকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান।
নেতৃবৃন্দকে বঙ্গভবনে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন কমিশন যাতে গঠন করা যায় সেজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সুচিন্তিত মতামত খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বঙ্গভবনে তাদের স্বাগত জানিয়ে বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন রাষ্ট্রপতির সাংবিধানিক দায়িত্ব। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সুচিন্তিত মতামত ও পরামর্শ সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন কমিশন গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক শিষ্টাচার ও রাজনীতিতে সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি, আর এ কাজটি রাজনৈতিক দলগুলোকেই করতে হবে।
এ সময় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মোঃ জয়নাল আবেদীন এবং সচিব (সংযুক্ত) মোঃ ওয়াহিদুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।
গত ২০ ডিসেম্বর সালমা সংলাপের প্রথম দিনে সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সাথে আলোচনায় বসেন রাষ্ট্রপতি হামিদ। এখন পর্যন্ত মোট ১৩ টি রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
আগামীকাল ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা ছয়টা হবে জাতীয় পার্টি (জেপি) এর সাথে সংলাপ এবং সন্ধ্যা সাতটায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর সাথে।
৬ জানুয়ারি গণফ্রন্টের সাথে সন্ধ্যা ছয়টায় এবং লিবারেল ডেমোক্রেটিক পাটির্র (এলডিপি) সাথে সন্ধ্যা সাতটায় সংলাপের কথা রয়েছে।
এদিকে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাথে আলোচনা হবে ৯ জানুয়ারি সন্ধ্যা ছয়টায় এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) এর সঙ্গে ওই দিন সন্ধ্যা সাতটায়।
১০ জানুয়ারি রোজ সোমবার সংলাপ হবে জাতীয় পার্টি (জেপি) এর সাথে সন্ধ্যা ছয়টায় এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সাথে সন্ধ্যা সাতটায়।
মঙ্গলবার ১১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ছয়টায় সংলাপ হবে ইসলামী ফন্ট বাংলাদেশের সাথে এবং ঐদিন সন্ধ্যা সাতটায় বৈঠক হবে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ) এর সাথে।
অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি।
এর আগে নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
রাষ্ট্রপতিকে সিইসি এবং অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। গত কয়েকটি মেয়াদে রাষ্ট্রপতি ‘সার্চ কমিটি’র সুপারিশের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন।
বর্তমান ইসির পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি। এ সময়ের মধ্যেই রাষ্ট্রপতি নতুন কমিশন গঠন করবেন, যাদের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।