রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত দ্রুত সমাধানের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সকল পক্ষকে সংযত থাকার এবং চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের দ্রুত ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ কাজাকিস্তানের আস্তানায় অনুষ্ঠিত ইন্টারঅ্যাকশন অ্যান্ড কনফিডেন্স বিল্ডিং মেজারস ইন এশিয়া (সিকা)-এর ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনে বক্তৃতাকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
আজ এখানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা বলা হয়।
শীর্ষ সম্মেলনে, ২৭ সিকা সদস্য দেশের নেতৃবৃন্দ, যার মধ্যে ১২জন রাষ্ট্র বা সরকার প্রধান এবং দুইজন উপরাষ্ট্র প্রধান উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয়ক্ষতি পূরণের নীতির আলোকে জলবায়ু অর্থায়নের অঙ্গীকার অনতিবিলম্বে বাস্তবায়নের উপর গুরত্ব আরোপ করেন। আগামী মাসে মিশরের শার্ম-আল-শেখ-এ অনুষ্ঠেয় বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের পূর্বে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছে তিনি এই আহ্বান জানান।
ড. মোমেন বক্তব্যে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের কারণে বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘœ ঘটছে, জ্বালানি ঘাটতির সৃষ্টি হচ্ছে এবং দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধ কঠিন হয়ে পড়ছে উল্লেখ করে বলেন, এর ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতির উপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।
শান্তির সংস্কৃতি সৃষ্টির মাধ্যমে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘে বাংলাদেশের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে তিনি নিরস্ত্রীকরণের প্রতি বাংলাদেশের অব্যহত অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন এবং পারমাণবিক অস্ত্র-মুক্ত বিশ্ব প্রতিষ্ঠার পক্ষে বাংলাদেশের অবস্থান পুনরায় তুলে ধরেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ অর্জনসহ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হবার লক্ষ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন উদ্যোগ ও উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরেন। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশ সরকার ‘হোল-অব-গভর্ণমেন্ট’ এবং ‘হোল-অব-সোসাইটি’ ধারণার ভিত্তিতে অংশগ্রহণমূলক উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে বলে ড. মোমেন সিকা নেতৃবৃন্দকে অবহিত করেন।
রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে সিকা নেতাদের সমর্থন কামনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, মিয়ানমারকে তাদের নাগরিকদের দ্রুততম সময়ে মধ্যে নিরাপদ, টেকসই এবং মর্যাদাপূর্ণ স্বদেশ প্রত্যাবাসনের জন্য উপযুক্ত পরিস্থিতি তৈরি করতে হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিকা-র ৩০তম বার্ষিকী উপলক্ষে সদস্য দেশগুলিকে অভিনন্দন জানান এবং সিকার আওতায় গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপে বাংলাদেশের সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন।
সম্মেলনে সিকা তহবিল, তথ্য প্রযুক্তির নিরাপদ ব্যবহার, এবং জাতিসংঘ গৃহীত সন্ত্রাসবাদ বিরোধী কৌশল (ইউএনজিসিটিএস) বাস্তবায়নে আস্থাবৃদ্ধিমূলক কর্ম-পরিকল্পনা গৃহীত হয়। এছাড়াও ‘আস্তানা স্টেটমেন্ট অব ট্রান্সফরমেশন’ শীর্ষক ঘোষণায় সিকাকে ফোরাম থেকে এশিয়া অঞ্চলের একটি আঞ্চলিক আন্তর্জাতিক সংগঠনে উন্নীতকরণের প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়ে নেতৃবৃন্দ ঐকমত্য পোষণ করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের পাশাপাশি বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুললতিফ বিন রাশিদ আল-যায়ানি, কাজাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী-পররাষ্ট্র মন্ত্রী মুখতার তেলেঊবারদি এবং কিরগিজস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কুলুবায়েভ যিনবেক মলডোকানোভিচ-এর সাথে পৃথক পৃথক বৈঠকে মিলিত হবেন।