শিক্ষা

স্মার্ট শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া হবে : শিক্ষামন্ত্রী 

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে ২০২৩ সালের নতুন শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে স্মার্ট শিক্ষা শুরু হলো।
তিনি বলেন, এই স্মার্ট শিক্ষা দেশের সরকার, অর্থনীতি ও সমাজকে স্মার্ট করে তুলবে।
আজ গাজীপুরের কাপাসিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মাধ্যমিক পর্যায়ের কেন্দ্রীয় বই উৎসবের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আজ ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা তোমরা যে বইগুলো পেলে সেগুলো আমাদের নতুন শিক্ষাক্রমের। নতুন শিক্ষাক্রম তৈরি করেছি শিক্ষক, শিক্ষার্থী অভিভাবক, শিক্ষাবিদ, বিশেষজ্ঞ, সকলের পরামর্শ ও অংশগ্রহণের মধ্যদিয়ে। এমন শিক্ষাক্রম তৈরি করেছি যেখানে শিক্ষা হবে আনন্দময়। পরীক্ষা থাকবে, তবে ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা করে করে শিখবে, সক্রিয় শিখন হবে, অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখন হবে। শিক্ষার্থী যা শিখবে তা প্রয়োগ করতে শিখবে। কেমন করে শিখতে হয় তাও শিখবে। পরীক্ষা ভীতি থাকবে না। মুখস্ত বিদ্যার বালাই থাকবে না।
বই উৎসব অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মা, মাতৃভূমি ও মাতৃভাষা- এই তিন মাকে ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি করিয়ে নেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এ সময় তিনি বলেন, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বলেছিলেন, ‘একজন মানুষের তিনজন মা। তার নিজের মা, তার মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমি।’ এই তিন মাকেই ভালোবাসতে হবে।
শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষাক্রমে আপনাদের মূল দায়িত্ব হবে, শুধু পড়িয়ে যাওয়া নয়, শিক্ষকের ভূমিকা হবে পথপ্রদর্শকের। শিক্ষার্থীদের সহায়ক শক্তি হিসেবে দাঁড়ানো, তাদের তত্ত্বাবধান করা। শিক্ষার্থীরা যেন ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে বড় হয়।’
অভিভাবক ও শিক্ষককদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বার বার সন্তানদের না বলতে বলতে তাদের মনের মধ্যে নেতিবাচকতা ঢুকিয়ে দেই। আসুন আমরা সন্তানদের ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে গড়বার সুযোগ করে দেই, যাতে তারা ভালো মানুষ হয়ে উঠতে পারে। শুধু ভালো ফলাফলের দিকে নজর দেবেন তা নয়, তারা যেন সুস্থ থাকে এবং ভালো মানুষ হয়, সে বিষয়ে শিক্ষকরাও নজর দেবেন বলে আমরা আশা করি।’
বই উৎসবের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ, কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. ওমর ফারুক, এনসিটিবির চেয়ারম্যান মো. ফরহাদ হোসেন, ইইডি’র প্রধান প্রকৌশলী দেলওয়ার হোসেনসহ অন্যারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, এবারও পহেলা জানুয়ারি (২০২৩) ৪ কোটি ০৯ লাখ ১৫ হাজার ৩৮১ জন শিক্ষার্থীর মাঝে ৩৩ কোটি ৯১ লাখ ১২ হাজার ৩০০ কপি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। ২০১০ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের সংখ্যা হবে সর্বমোট ৪৩৪ কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার ২১১ কপি।
অন্যদিকে, প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরে ২ কোটি ১৯ লাখ ৮৪ হাজার ৮২৩ জন শিক্ষার্থীর মাঝে ৯ কোটি ৬৬ লাখ ৩৮ হাজার ২৪৫টি বই বিতরণ করা হবে। প্রাক-প্রাথমিক স্তরে ৬৬ লাখ ২৯ হাজার ৮৪টি আমার বই এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রাক-প্রাথমিক এবং ১ম, ২য় ও ৩য় শ্রেণির সর্বমোট ২লাখ ১২ হাজার ১৭৭টি পুস্তক বিতরণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *