স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ইন্ডাস্ট্রি’র উপযোগী পাঠদান পদ্ধতি অপরিহার্য : জব্বার
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ‘ইন্ডাস্ট্রি’র উপযোগী স্মার্ট পাঠদান পদ্ধতি অপরিহার্য।
‘আজকের পৃথিবীতে শিক্ষা মানে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে দক্ষতা অর্জনের শিক্ষা’ এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের মাধ্যমে স্মার্ট জনশক্তি তৈরি করে আমাদের পপুলেশন ডিভিডেন্টের বিরাট সুযোগ কাজে লাগাতেই হবে। শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের পাশাপাশি ডিজিটাল বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।’
মন্ত্রী একাডেমিয়া ও ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে একটি কার্যকর ডিজিটাল দক্ষতা সম্পন্ন জাতি গড়ে তুলতে ইউজিসি ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
মোস্তাফা জব্বার আজ শুক্রবার রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে যুক্তরাজ্যের নটিংহাম ট্রেন্ট বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সহযোগিতায় জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত ‘ইনক্লুসিভ হাইয়ার এডুকেশন ঃ বাংলাদেশ কনটেক্সট’ র্শীর্ষক দু’দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ আহবান জানান।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী শিক্ষায় প্রথাগত পদ্ধতির সাথে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষা বিস্তারের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, ‘আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকে স্মার্ট শিক্ষা ব্যবস্থায় রূপান্তর করা। আমরা কেবল প্রথাগত শিক্ষার সার্টফিকেট দিব কিন্তু তাদেরকে ডিজিটাল দক্ষতা দিব না, এটা হতে পারে না।’
ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত মোস্তাফা জব্বার বলেন, পৃথিবীর বড় লাইব্রেরির নাম হচ্ছে ইন্টারনেট। সেই লাইব্রেরি থেকে তথ্য নেওয়ার দক্ষতা অর্জনের শিক্ষা দিতে হবে। প্রচলিত শিক্ষায় এটি দেওয়া হয় না।
তিনি বলেন, অতীতের তিনটি শিল্প বিপ্লবে শরীক হতে না পেরে এই দেশের মানুষ প্রযুক্তিতে শত শত বছর পিছিয়ে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তার পাঁচ বছরের শাসনামলে দেশে ভিস্যাটের মাধ্যমে ইন্টারনেট চালুসহ যুগান্তকারি বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে তৃতীয় শিল্প বিপ্লবে বাংলাদেশকে শরীক করার প্রচেষ্টা গ্রহণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে গত ১৪ বছরে বাংলাদেশকে পঞ্চম শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্বের যোগ্যতায় উপনীত করেছেন। টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ডিজিটাল প্রযুক্তির বিকাশে গৃহীত কর্মসূচি তুলে ধরে বলেন, ইন্টারনেট ছাড়া মানুষের স্বাভাবিক জীবনধারা এখন অকল্পনীয়। ২০০৮ সালে দেশে সাড়ে সাত জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যবহৃত হতো। বর্তমানে তা ৩৮৪০ জিবিপিএসে উপনীত হয়েছে।
জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো: নুরুল আলমের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বুয়েটের উপাচার্য প্রফেসর ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার, যুক্তরাজ্যের নটিংহাম ট্রেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটিং এন্ড ইনফরমেশন রিসার্স সেন্টারের পরিচালক প্রফেসর ডেভিড জে ব্রাউন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য প্রফেসর বিশ্বজিৎ চন্দ্র এবং জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর রাশেদা আক্তার বক্তৃতা করেন।
বক্তারা শিক্ষার মাধ্যমে ডিজিটাল দক্ষতাসম্পন্ন জাতি বিনির্মাণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তারা বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ডিজিটাল শিক্ষা বিষয়ে গবেষণা ও উদ্ভাবনে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকা অপরিহার্য।