সাম্প্রদায়িকতা ও কূপমন্ডুকতা রুখতে দরকার দেশব্যাপী সাংস্কৃতিক গণজাগরণ : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সাম্প্রদায়িকতা ও কূপমন্ডুকতাকে রুখে দিতে এবং দেশাত্মবোধ, উন্নয়ন ও মানবতাকে তুলে ধরতে প্রান্তিক জনপদসহ সারাদেশে সাংস্কৃতিক গণজাগরণ দরকার। তাহলে দেশ এগিয়ে যাবে।
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিলনায়তনে অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ সম্পাদিত ‘পদ্মা ব্রিজ : এন এপিক একমপ্লিশমেন্ট’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন ও হাসানুজ্জামান মাসুম রচিত ‘সোনার বাংলাদেশ দেখতে চাই’ দেশাত্মবোধক ভিডিও সংগীত উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শাহরিয়ার আলম এমপি এবং অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জামান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় গ্রন্থ ও দেশাত্মবোধক ভিডিও সংগীতটির ওপর আলোকপাত করেন। গবেষক ড. শিহাব শাহরিয়ার ও গীতিকার হাসানুজ্জামান মাসুম এ সময় বক্তব্য দেন।
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ জননেত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তা ও আমাদের জাতির সক্ষমতার প্রতীক উল্লেখ করে- পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কানাডার আদালত প্রস্তাবিত পদ্মাসেতু নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগকে খারিজ করে দেওয়ার পর বিশ্বব্যাংক আবার অর্থায়ন করতে চেয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা তা না বলে দিয়েছিলেন। উন্নয়নশীল কোন রাষ্ট্রনেতার পক্ষে এই দৃঢ়তা প্রদর্শন সহজ নয়।
মন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মাসেতু নির্মাণ আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল। যখন বিশ্বব্যাংক সরে গেলো, তখন অনেকেই বলেছে পদ্মা সেতু আর হবে না। একটি পত্রিকা শিরোনাম করলো ‘পদ্মাসেতু হচ্ছে না’। এরপর প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিলেন নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণের। আজ পদ্মাসেতু দৃশ্যমান ও দেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রেখে চলেছে।’
যারা পদ্মাসেতু নির্মাণ নিয়ে নেতিবাচক কথা বলেছিলেন, সমালোচনা করেছিলেন, তারা এখনো নিজেদের ভুল স্বীকার করেননি- উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার মনে হয় পদ্মা সেতু নিয়ে সিপিডি, টিআইবিসহ সব সমালোচনাকারীদের জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত এবং জাতি ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশে যে কোনো উন্নয়ন সম্ভব সেটির বড় প্রমাণ নিন্দুকের সাথে চ্যালেঞ্জ করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গড়া পদ্মা সেতু।
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু’র বাংলাদেশ সফর নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের চমৎকার সম্পর্ক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মতো নির্বাচিত হওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চিঠি দিয়ে এ সম্পর্ককে যে নতুন উচ্চতায় নেওয়ার কথা বলেছেন, মার্কিন প্রশাসনের যেই আসুন সেই ধারাবাহিকতাতেই আলোচনা হবে।
এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি সহজীকরণ এবং র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এ সব নিয়েও আলোচনা হবে।
বিএনপির সাম্প্রতিক রাজনীতি নিয়ে প্রশ্নে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তাদের ভারতীয় পণ্য বর্জনের আন্দোলন মুখ থুবড়ে পড়েছে। এর মুল উদ্দেশ্য ছিলো দেশের বাজারকে অস্থিতিশীল করা। তাদের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। তাদের বাসায় এখনো ভারতীয় পণ্য রয়েছে।’
ছোট ছোট দলের সাথে বিএনপির বৈঠক নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির জোটের মধ্যে সমন্বয় নেই, কোনো দল জোট থেকে চলে যায় আবার কোনো দল ভেঙে দুই-তিনটা হয়। জোটের পরিধি তাই কখনো বাড়ে, কখনো কমে। মির্জা ফখরুল সাহেব যদি তাদের জোটের সব দলের নাম বলতে পারেন, আমি খুশিই হবো।’