শেখ হাসিনা’র নাম জনগণের হৃদয়ে গেঁথে থাকবে : সেতুমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মান করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র নাম জনগণের হৃদয়ে চিরদিন গেঁথে থাকবে। আজ শনিবার দুপুরে মাদারীপুরের শিবচর কাঁঠালবাড়িতে পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি একথা বলেন। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় যোগাযোগ প্রকল্প পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কাঁঠালবাড়িতে এই জনসভার আয়োজন করা হয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে জনসভায় গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন। প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আজকে নিজের নাম পদ্মা সেতুর সঙ্গে যুক্ত করেন নি। কিন্তু বাংলার জনগণ জানে, বাংলার জনগণের হৃদয়ে আজকে তিনি যে আবেগ-ভালোবাসা এঁটে দিলেন- যতদিন পদ্মা সেতু থাকবে, ততদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আপনাকেও মানুষ স্মরণ করবে। শেখ হাসিনার নাম চিরদিন জনগণের হৃদয়ে গেঁথে থাকবে।’ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যার ডাকে সাড়া দিয়ে পদ্মাপাড়ের অনেক মানুষ তাদের বাপ-দাদার বাড়ি ছেড়ে দিয়েছেন- তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। শেখ হাসিনার মুখের দিকে তাকিয়ে আপনারা এই ত্যাগ স্বীকার করেছেন। যখন চারদিকে নানান ষড়যন্ত্র তখন নেত্রী আমাদের সাহস দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করেছেন। সেজন্য এ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ আজ এখানে একত্রিত হয়েছেন।
পদ্মাসেতু উদ্বোধন হওয়ায় বিএনপি’র মুখে শ্রাবণের আকাশের মেঘ উল্লিখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ আজ সবার মুখে আনন্দের হাসি। আর বিএনপির মুখে শ্রাবণের আকাশের মেঘ। এত ষড়যন্ত্র, এত কূটচাল, তারপরও শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু করে ফেললেন। মির্জা ফখরুলের (বিএনপি মহাসচিব) মন খারাপ, বুকে বড় ব্যথা, বড় বিষের জ্বালা। জ্বালায়-জ্বালায় মরছে তারা।’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ পদ্মার পাড়ে কত ছেলে তার অসুস্থ মাকে নিয়ে অপেক্ষা করেছে। কিন্তু ফেরি আসেনি। পরে মায়ের মৃত লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরেছে। পদ্মায় আটকা পড়ে কত ছেলে তারা বাবার জানাজায় যেতে পারেনি। অনেকে বলে, পদ্মা সেতুর জন্য এত টাকা, এত টোল, কিন্তু এ এলাকার মানুষ জানে পদ্মা সেতু তাদের কত প্রয়োজন। যারা বিষয়টি জানে না, তারা পদ্মা সেতুর গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারবে না।
এর আগে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে রাখেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গোটা জাতি আজ আপনাকে (প্রধানমন্ত্রী) স্যালুট করে। সারা বিশ্বে আজ আপনি প্রশংসিত। আপনি প্রমাণ করেছেন ‘আমরাও পারি’। আপনি বলেছেন, নিজের টাকায় করবো। প্রমাণ করেছেন নিজের টাকায় পদ্মা সেতু করেছেন। মাথা নত করেননি বঙ্গবন্ধুকন্যা। কী দুঃসময়, কঠিন সময়, দেশে-বিদেশে চক্রান্ত সব উপেক্ষা করে শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন আমরা বীরের জাতি।’ ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কেবল একা নন প্রধানমন্ত্রী, শেখ রেহানা, জয়, পুতুল, ববির কী অপরাধ ছিল। একটা পরিবারকে টার্গেট করে হেনস্তা করা হয়েছিল। একটা পরিবারকে অপমান করা হয়েছে। বাঙালি জাতিকে অপমান করা হয়েছে।এই প্রকল্প থেকে সরে গিয়ে। অপবাদ দিয়েছে দুর্নীতির। অনেককেই অপমানিত হতে হয়েছে পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে সরে গিয়ে।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘সব প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে কাজ শুরু করা ছিল চ্যালেঞ্জের। এই সেতু নির্মাণে অন্য কারও কৃতিত্ব নেই, সব কৃতিত্ব একজনের। তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।’
এর আগে স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। শনিবার সকাল ১০টায় হেলিকপ্টারযোগে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে সমাবেশস্থলে পৌঁছান।