‘বৈশ্বিক মন্দার কারণে এবার সাদামাটা সম্মেলন করবে আ.লীগ’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ‘বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা ও খরচ কমাতে দলের ২২তম জাতীয় সম্মেলন অত্যন্ত অর্থবহ হবে। এই সাদামাটা সম্মেলনে মূল লক্ষ্য থাকবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ। এবার নতুন যে নেতৃত্ব আসবেন, সেই নেতৃত্বের অধীনেই আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং শেখ হাসিনাকে টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করে তার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার অঙ্গীকার থাকবে।’
শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ২২তম জাতীয় সম্মেলন সামনে রেখে মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপকমিটির আহ্বায়ক নানক সম্মেলনস্থল পরিদর্শনে এসে এসব কথা বলেন।
নানক বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল। এ দলটি বলেছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবে। সেটা সম্পন্ন হয়েছে। এবার আসন্ন কাউন্সিলে আমাদের বক্তব্য আসছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবো। তবে আগামী ২৪ ডিসেম্বর জাতীয় কাউন্সিল বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার কারণে সাদামাটা ও সংক্ষিপ্ত পরিসরে করার জন্য নেত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে দুই দিনব্যাপী আমাদের কাউন্সিল সম্পন্ন হয়ে আসছিল। কিন্তু এবার কৃচ্ছ্রসাধন ও খরচ কমানোর লক্ষ্যে দুই দিনের পরিবর্তে এক দিন করার নির্দেশনা দিয়েছেন শেখ হাসিনা।’
এবার সাজসজ্জাও হচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে ঢাকা শহরসহ সারা দেশ নতুন সাজে সজ্জিত হতো। কিন্তু এবার আমরা ঢাকা মহানগরসহ দেশের কোথাও সাজসজ্জা করছি না। সাদামাটা করা হলেও লাখ লাখ নেতাকর্মী, কাউন্সিলর, ডেলিগেট আসবেন সম্মেলনে। তাদের উচ্ছ্বাসের কোনও ঘাটতি থাকবে না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিয়ে এবারের কাউন্সিল অত্যন্ত অর্থবহ হবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখেও এবারের কাউন্সিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
সম্মেলন আয়োজনের বিষয়ে নানক বলেন, ‘আমরা কাউন্সিলের সব আয়োজন সম্পন্ন করছি। ইতোমধ্যে মঞ্চ-প্যান্ডেলসহ আনুষঙ্গিক সবকিছু তৈরি করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা আশা করি আগামী ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব আয়োজন সম্পন্ন করতে পারবো।’
এই কাউন্সিলে বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নানক বলেন, ‘এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আমাদের জানানোটাই স্বাভাবিক। আমরা প্রতি সম্মেলনেই তাদের আমন্ত্রণ জানাই।’
এ সময় দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘এই সম্মেলন বিশাল মিলনমেলায় পরিণত হবে। দেশের যেসব তরুণ ও প্রবীণ নেতাকর্মী আওয়ামী লীগের সঙ্গে এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সঙ্গে কাজ করেছে, সম্মেলনে তাদের অংশগ্রহণ নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে। আগামী দিনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার সিদ্ধান্ত আসবে, তা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে পৌঁছে দেবেন আমাদের কাউন্সিলর, ডেলিগেটসহ নেতাকর্মীরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেশকে একটি আত্মনির্ভরশীল, মর্যাদাশীল, উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাবো। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচনে জনগণের সমর্থন আদায়ের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়াই হবে এবারের কাউন্সিলের মূল প্রত্যয়।’
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, ‘এই সম্মেলনের মাধ্যমে যে নতুন নেতৃত্ব আসবেন, সেই নেতৃত্বের অধীনেই ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে টানা চতুর্থবারে মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করে তার নতুন স্বপ্ন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, আইন সম্পাদক নজিবুল্লাহ হিরু, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য এ বি এম রিয়াজুল কবির কাওসার, শাহাবুদ্দিন ফরাজী, সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদকদ্বয় এস এম মান্নান কচি, হুমায়ুন কবিরসহ অনেকে।