বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিজস্ব তহবিল তৈরির পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর
দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উন্নয়ন ও কল্যাণমূলক কাজ পরিচালনায় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে নিজস্ব তহবিল গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) গণভবনে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলরদের সমন্বয়ে গঠিত ‘বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ’ এর স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকালে তিনি এ কথা বলেন।
পরে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব কে এম শাখাওয়াত মুন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন রয়েছে এবং এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উন্নয়ন ও শিক্ষার্থীদের কল্যাণে প্রকল্প বাস্তবায়নে তারা নিজস্ব ফান্ড তৈরি করতে পারে।
শিক্ষার্থীদের দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে ভাইস-চ্যান্সেলরদের সরকারপ্রধান বলেন, পড়ালেখার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের দেশের উন্নয়নে কাজের উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত মেধাবী, তাদের একটু সুযোগ করে দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখা শেষ করে বিদেশ থেকেও তারা উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে আসতে পারে।
ছাত্র-ছাত্রীদের উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আরও দায়িত্বশীল ও মনোযোগী হবার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন পূরণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সোনার ছেলে গড়ে তুলতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেন সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ থেকে দূরে থাকে সে লক্ষ্যে পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলা, সংস্কৃতি চর্চা ও সৃজনশীল কাজের মধ্যে তাদের যুক্ত রাখতে হবে।
এ লক্ষ্যে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আবার চালুর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, এক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অস্ত্রের ঝনঝনানি ছিল, তবে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর অস্ত্রের ঝনঝনানি নেই এবং দেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে কঠোর হস্তে দমন করা হয়েছে।
সরকার তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুবকরা পড়ালেখা করে চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেরাই যেন উদ্যোক্তা হয়ে অন্যদের চাকরি দিতে পারে সে লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখন দেশে শিক্ষার হার ও মান বাড়ে।
এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, তার সরকার শিক্ষার উন্নয়ন, গবেষণা, উৎপাদন ও উৎকর্ষতার পাশাপাশি দক্ষতা উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়েছে।
একইসঙ্গে পরিকল্পিতভাবে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখে সরকার ধীরে ধীরে দেশকে শিল্পায়নের দিকে এগিয়ে নিচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, তার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছে।
উন্নয়নের এ ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ২০৪১ সালে উন্নত-সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা তাদের নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরলে প্রধানমন্ত্রী এসব সমস্যা পর্যায়ক্রমে সমাধানের আশ্বাস দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের ৪৮টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।