বাংলাদেশ ও হাঙ্গেরীর মধ্যে পরমাণু জ্বালানী সংক্রান্ত সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরিত
বাংলাদেশ ও হাঙ্গেরীর মধ্যে পরমাণু জ্বালানীর জ্বালানীর শান্তিপূর্ণ ব্যবহার সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার ক্ষেত্রে সহযোগিতার ব্যাপারে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
আজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন এবং হাঙ্গেরীর পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার জিজার্তো মঙ্গলবার বুদাপেস্টে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
এটা ছাড়াও পররাষ্ট্রমন্ত্রীগণ ঢাকা ও বুদাপেস্টের মধ্যে ডিপ্লোম্যাটিক এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের বিষয়ে আরেকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন।
এর আগে, ড. মোমেন ও জিজার্তের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। জিজার্তো হাঙ্গেরীর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পাশাপাশি বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করছেন।
বৈঠককালে তারা অর্থনৈতিক সহযোগিতা, স্বাস্থ্য, জলবায়ু পরিবর্তন, পানি ও বর্জ্য পানি ব্যবস্থাপনা, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ পরবর্তী সুবিধাসহ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, পরমাণু জ্বালানী ও কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রসহ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো জোরদারে সম্মত হন।
হাঙ্গেরীর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঘোষণা দেন যে, আজ থেকে ঢাকাস্থ হাঙ্গেরীর কন্স্যুলার অফিস পূর্ণাঙ্গ কন্স্যুলার সেবা প্রদান করতে কাজ করবে।
উভয় মন্ত্রী অদূর ভবিষ্যতে ঢাকা ও বুদাপেস্ট আবাসিক মিশন খোলার আশা প্রকাশ করেন।
ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ) এর সদ্য বিদায়ী চেয়ার হিসেবে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় নেতৃত্বের ভূমিকার কথা তুলে ধরে ড. মোমেন প্যারিস জলবায়ু চুক্তি বাস্তবায়নে অধিকতর সমর্থন আদায়ে সহযোগিতা প্রদানের জন্য হাঙ্গেরীর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানান।
এ সময় দুই মন্ত্রী দূষণমুক্ত ও নবায়নযোগ্য জ্বালানী খাতে সহযোগিতা করতেও সম্মত হন।
বাংলাদেশ ও হাঙ্গেরী উভয়েই নতুন পরমাণু শক্তি কেন্দ্রের জন্য অনুরূপ প্রযুক্তি ব্যবহার করছে বিধায়, তারা পরমাণু জ্বালানী ক্ষেত্রে ভবিষ্যত সহযোগিতার ব্যাপারেও আলোচনা করেন।
তারা পরমাণু জ্বালানী পেশাজীবীদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা প্রদানের ব্যাপারে সম্মত হন।
মন্ত্রীগণ স্টিপেন্ডিয়াম হাঙ্গেরীকাম প্রোগ্রাম নামে হাঙ্গেরীয়ান বৃত্তির আওতায় চলমান সহযোগিতার সাফল্যে সন্তোষ প্রকাশ করেন। এই প্রোগ্রামের আওতায় বছরে ১৪০ জন বাংলাদেশী শিক্ষার্থী ¯œাতক-পূর্ব, ¯œাতক ও ¯œাতকোত্তর ডিগ্রীলাভের জন্য পড়াশুনা করতে হাঙ্গেরীর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হচ্ছে।
এ সময় ড. মোমেন রোহিঙ্গাদের তাদের জন্মভূমি মিয়ানমারে দ্রুত ও টেকসই প্রত্যাবাসন ইস্যুতে বহুপক্ষীয় ফোরামে অব্যাহত সমর্থন দেয়ার জন্য হাঙ্গেরীর পররাষ্ট্র ও বাণিজ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান।
জিজার্তো ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাষে বাংলাদেশে তার সফল সফরের কথা তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ব্যাপক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
এ সময় ড. মোমেন হাঙ্গেরীর পুনঃনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ভিক্টোর ওর্বানের জন্য দেয়া প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার একটি বিশেষ বার্তা পিটার জিজার্তোর কাছে হস্তান্তর করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীগণ এ বছর বাংলাদেশে হাঙ্গেরীর প্রধানমন্ত্রী ওর্বানের সম্ভাব্য সফরের ব্যাপারে কাজ করতে সম্মত হন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন এখন সরকারি সফরে হাঙ্গেরীতে অবস্থান করছেন।