প্রস্তাবে বাস্তব পয়েন্ট না থাকায় ইউক্রেন প্রশ্নে ভোটে বিরত ছিল ঢাকা : মুখপাত্র
নিবিড় কূটনৈতিক সম্পৃক্ততা এবং সংঘাতে লিপ্ত পক্ষগুলোর মধ্যে সংলাপের মতো ‘গুরুত্বপূর্ণ বাস্তব পয়েন্ট’ না থাকায়, ‘শুধুমাত্র ইউক্রেনে শান্তি’-র ওপর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) সাম্প্রতিকতম অধিবেশনে আনীত একটি প্রস্তাবে ভোট দানে বিরত থেকেছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরিন আজ বলেন, ‘যেহেতু এই প্রস্তাবনার মূল লক্ষ্য ইউক্রেনে একটি সমন্বিত, যথাযথ ও টেকসই শান্তির উপায় খোঁজা, সেহেতু আমরা বিশ্বাস করি যে চলমান এই সংঘাতের যে কোন অর্থবহ ও টেকসই সমাধানের জন্য নিবিড় কূটনৈতিক সম্পৃক্ততা এবং এই সংঘাতে লিপ্ত পক্ষগুলোর মধ্যে সংলাপ অবশ্যই জরুরি।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের মতে, প্রস্তাবটিতে এই গুরুত্বপূর্ণ বাস্তব পয়েন্টই না থাকায়, আমরা ভোটদানে বিরত থেকেছি।’ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এই মিডিয়া ব্রিফিংকালে কোন প্রশ্ন না নিয়েই, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জাতিসংঘ সাধারন পরিষদের ওই প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থাকার যুক্তি তুলে ধরেন।
মুখপাত্র সেহেলী সাবরিন বলেন, বাংলাদেশ ইউক্রেন পরিস্থিতি, বিশেষত সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে বেসামরিক প্রাণহানি, মানবিক পরিস্থিতির অবনতি এবং এই যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতিতে বিরূপ প্রভাবের ব্যাপারে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
তিনি বলেন, ‘আমরা বৈরিতার অবসান এবং আমাদের অঙ্গীকারে অটল থাকার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, যা জাতিসংঘ সনদের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ এবং যে কোন মূল্যে একে সমুন্নত রাখতে হবে।’ তিনি বলেন, ঢাকা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ মীমাংসা- প্রত্যেকের জন্য, সর্বস্থানে ও সর্বাবস্থায় ব্যতিক্রমহীন এবং সার্বজনীনভাবে গ্রহণীয় হতে হবে। বাংলাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নীতি- ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং কারো সঙ্গে বৈরীতা নয়’ উল্লেখ করে সাবরিন বলেন, বাংলাদেশের একটি শান্তিকেন্দ্রিক পররাষ্ট্র নীতি রয়েছে- যা জাতিসংঘের নীতিরসাথে সঙ্গতিপূর্ণভাবে সবার সার্বভৌমত্বের ওপর সমানভাবে শ্রদ্ধাশীল এবং সকল রাষ্ট্রের ভূখ-গত অখন্ডতা, আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ মীমাংসার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সাধারন পরিষদে এই প্রস্তাবের পক্ষে ১৪১টি সদস্যরাষ্ট্র, বিপক্ষে ৭টি রাষ্ট্র ভোট দেয় এবং ৩২টি রাষ্ট্র ভোটদানে বিরত থাকে। বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া, ইরিত্রিয়া, মালি, নিকারাগুয়া, রাশিয়া ও সিরিয়া এই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে।