প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রনেতা থেকে আজ বিশ্বনেতা : তথ্যমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রনেতা থেকে এখন বিশ্বনেতা। বাংলাদেশের ললাটে যত অর্জন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই গত কয়েক দশকে তা অর্জিত হয়েছে।
তিনি আজ দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ফিল্ম আর্কাইভ মিলনায়তনে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর নির্মিত প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘শেখ হাসিনা গণতন্ত্র ও উন্নয়নের রূপকার’ এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিতব্য প্রধানমন্ত্রীর জীবনভিত্তিক টাইমলাইন ‘শেখ হাসিনা প্রতিদিন’ উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক সোহরাব হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: মকবুল হোসেন। বক্তব্য দেন চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের মহাপরিচালক স ম গোলাম কিবরিয়া এবং একাত্তর টিভির চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক।
ড. হাছান বলেন, ‘আজ বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিন। এ উপলক্ষে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘শেখ হাসিনা গণতন্ত্র ও উন্নয়নের রূপকার’ গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের মাধ্যমে সারাদেশে প্রচারিত হবে এবং বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানলকেও এটি দেয়া হবে। তারা তাদের সুবিধামতো তা প্রচার করবে। এছাড়া, বাংলাদেশ টেলিভিশনের পক্ষ থেকে ‘শেখ হাসিনা প্রতিদিন’ টাইমলাইনটি মানুষকে প্রধানমন্ত্রীর জীবনালেখ্য জানানোর জন্য প্রচার করা হবে, দেশের অন্যান্য টেলিভিশনও তা প্রচার করবে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে জননেত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রনেতা থেকে বিশ্ব নেতায় রূপান্তরিত হয়েছেন। চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের মহাপরিচালকের সংগ্রহে থাকা ১৯৭০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি একটি মিছিলে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব দেয়ার ছবিটি আমি দেখেছি। জননেত্রী শেখ হাসিনা তখন শুধু ইডেন কলেজের ভিপি ছিলেন তা নয়, তিনি ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। আজকে তিনি ছাত্রনেতা থেকে বিশ্বনেতায় রূপান্তরিত হয়েছেন।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রতীক, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতীক, দেশের উন্নয়ন অগ্রগতির প্রতীক, বাঙালি সংস্কৃতির প্রতীক। তিনি একজন বাঙালি নারীর সত্যিকারের প্রতিচ্ছবি, যাকে দেখলে একজন বাঙালি নারী কেমন, সেটি দেখা যায়। যার সাথে কথা বললে একজন বাঙালি মা কেমন সেটি জানা যায়, যার সাথে কথা বললে একজন বাঙালি কন্যা ও বধূ কেমন সেটি বোঝা যায়, জানা যায়।’
তিনি বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা শিশুকাল থেকেই সংগ্রামের মধ্যে। তার জন্মের সময় পিতা সেখানে ছিলেন না, বিয়ের সময় পিতা সেখানে ছিলেন না, তার প্রথম সন্তান জন্মের সময় তার পিতা কারাবন্দি ছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ছিলেন অন্তরীণ। সেই অন্তরীণ অবস্থায় তার প্রথম সন্তান প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্ম। অর্থাৎ জীবনের সবগুলো গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে বাবাকে তিনি পাননি। তাই শৈশব থেকে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বড় হয়েছেন শেখ হাসিনা।’
‘যেখানে পরিণত বয়সেও কারো পিতা মৃত্যুবরণ করলে সন্তানের মেনে নিতে কষ্ট হয়, সেখানে জননেত্রী শেখ হাসিনা একদিনে হঠাৎ মা, বাবা, ভাই-ভাবী, আত্মীয়-পরিজন সবাইকে হারিয়ে আবার বাংলাদেশের সমস্ত মানুষকে আপনজন করে নিয়েছেন’ উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘বারবার মৃত্যু উপত্যকা থেকে ফিরে এসে আরো দীপ্তপদভারে তিনি বাংলাদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের কাফেলাকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। এটি একজন শেখ হাসিনার পক্ষেই সম্ভব। আমি মনে করি, বিশ্ব প্রেক্ষাপটেও এতো দুর্ঘটনার পর এরকম নেতৃত্ব প্রদান সহজ নয়।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যখন ভারতে গিয়েছিলেন তখন ভারতের কংগ্রেসনেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী তার সাথে দেখা করেছিলেন এবং তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন। সেই পোস্টে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী লিখেছিলেন, শেখ হাসিনা হচ্ছেন আমার প্রেরণার উৎস। সবাইকে হারিয়ে দেশের কোটি কোটি মানুষকে আপন করে নিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন শুধু প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর কাছে নয়, সমগ্র পৃথিবীর সকল রাজনৈতিক নেতাদের কাছে তিনি এক অনন্য উদাহরণ ও প্রেরণার উৎস।’
মন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনা প্রতিদিন’ টাইমলাইন নির্মাণ ও প্রচারের উদ্যোগ নেয়ার জন্য বাংলাদেশ টেলিভিশন বিশেষ করে একাত্তর টিভির কর্ণধার মোজাম্মেল বাবু ও তার দলকে আমি ধন্যবাদ জানাই। কারণ শেখ হাসিনাকে জানলে বাঙালি ও বাংলাদেশের সংগ্রাম, ইতিহাস জানা হবে, উজান ঠেলে প্রতিবন্ধকতা জয় করে এগিয়ে গিয়ে জাতির অর্জনের ইতিহাসটাও জানা হবে। আজকের এই দিনে জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অনেক শ্রদ্ধা, ভালোবাসা। তিনি আরো বহু বছর ধরে জাতিকে নেতৃত্ব দিয়ে যান, তার জন্মদিনে সেটিই প্রত্যাশা।’