প্রথম ব্যক্তি হিসেবে টানেলে টোল দিলেন প্রধানমন্ত্রী
টানেলযুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে টোল দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (২৮ অক্টোবর) বেলা ১২টা ১ মিনিটে টানেলের আনোয়ারা প্রান্তে পৌঁছে টোল দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে টানেলের টোল কালেকশন করেন ঝুমুর আক্তার।
এসময় প্রধানমন্ত্রী তার সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করেন। উদ্বোধন ও টোল দেওয়ার আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর কর্ণফুলীর কেইপিজেড মাঠে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
টোল গ্রহণ শেষে ঝুমুর আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী টানেলের প্রথম টোল প্রদানকারী ব্যক্তি। তার কাছ থেকে টোল নিতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। বাংলাদেশ আজ নতুন গৌরবময় এক অধ্যায়ে পা রাখছে। এর মধ্য দিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়ন আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহরে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিমসহ অন্যান্যরা।
জানা গেছে, কর্ণফুলী নদীর দুই তীর সংযুক্ত করে চীনের সাংহাই শহরের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে টানেলটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিন পিং টানেল প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম টানেল টিউবের বোরিং কাজের উদ্বোধন করেন।
নির্মাণের আগে করা সমীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী, টানেল চালুর পর এর ভেতর দিয়ে বছরে ৬৩ লাখ গাড়ি চলাচল করতে পারবে। সে হিসেবে দিনে চলতে পারবে ১৭ হাজার ২৬০টি গাড়ি। ২০২৫ সাল নাগাদ টানেল দিয়ে গড়ে প্রতিদিন ২৮ হাজার ৩০৫টি যানবাহন চলাচল করবে। যার মধ্যে অর্ধেক থাকবে পণ্যবাহী পরিবহন। ২০৩০ সাল নাগাদ প্রতিদিন গড়ে ৩৭ হাজার ৯৪৬টি এবং ২০৬৭ সাল নাগাদ এক লাখ ৬২ হাজার যানবাহন চলাচলের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা আছে।
টানেল নির্মাণে মোট ব্যয় ধরা হয় ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে চার হাজার ৪৬১ কোটি টাকা। বাকি পাঁচ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা দিচ্ছে চীন সরকার। চীনের এক্সিম ব্যাংক ২ শতাংশ হারে ২০ বছর মেয়াদি এ ঋণ দিয়েছে। চীনের কমিউনিকেশন ও কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসি) টানেল নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে।