পাঠ্যবইয়ে ভুল: দুই কমিটির প্রতিবেদন এক মাসের মধ্যে
পাঠ্যবইয়ে ভুল সংশোধন ও সংশ্লিষ্টদের অবহেলা খুঁজতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় দুটি কমিটি গঠন করেছে। মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করে। অফিস আদেশে এই দুই কমিটির সদস্যদের নাম ও তাদের কার্যপরিধিও তুলে ধরা হয়েছে। এই দুই কমিটির মধ্যে ভুল সংশোধনে গঠন করা কমিটিকে এক মাসের মধ্যে এবং অবহেলা খুঁজতে গঠন করা কমিটিকে তিন সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খালেদা আক্তার আহ্বায়ক করে ‘অবহেলা খুঁজতে’ সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। আর পাঠ্যবইয়ের ‘ভুল বা অসঙ্গতি খুঁজে বের করতে’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিটিউট অব এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্স (আইইআর) পরিচালক ড. আব্দুল হালিমকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের আরও একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই দুই কমিটিকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে এনসিটিবি।
এর আগে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছিলেন, পাঠ্যবইয়ে ভুল বা অসঙ্গি থাকলে তা সংশোধনের জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি কমিটি এবং শর্ষের মধ্যে যদি ভূত থাকে, কারও যদি অবহেলা থাকে; তা খুঁজে বের করতে আরও একটি কমিটি গঠন করা হবে।
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) মন্ত্রণালয় সেই কমিটি দুটি গঠন করে অফিস আদেশ জারি করলো।
অবহেলা খুঁজতে কমিটি
অফিস আদেশে জানানো হয়, ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে অসঙ্গতি বা তুল তথ্য-উপাত্ত সন্নিবেশ হয়ে থাকলে তা পর্যালোচনা করে সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে কারও গাফেলতি, ইচ্ছেকৃত ভুল ছিল কি-না তা চিহ্নিত করে সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে।
কমিটিকে আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
এই কমিটিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খালেদা আক্তার আহ্বায়ক করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেন—মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের যুগ্মসচিব মোল্লা মিজানুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ মনোনীত উপসচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (অর্থ ও ক্রয়) অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম খান, বিএএফ শাহীন স্কুলের সহকারী শিক্ষক মো. আব্দুল মান্নান মিয়া। আর কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. মিজানুর রহমানকে।
এই কমিটি’র কার্যপরিধি সম্পর্কে অফিস আদেশে বলা হয়েছে, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে অসঙ্গতি বা ভুল তথ্য-উপাত্ত সন্নিবেশ হয়ে থাকলে তা পর্যালোচনা করে সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে কারও গাফলতি বা ইচ্ছেকৃত ভুল ছিল কি-না তা চিহ্নিত করে সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে। কমিটি আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবে। এতে আরও বলা হয়েছে, কমিটি প্রয়োজনে এক জন সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে।
ভুল সংশোধনে বিশেষজ্ঞ কমিটি
অফিস আদেশে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের অসঙ্গতি বা ভুল কিংবা ত্রুটি চিহ্নিত করে তা সংশোধনে প্রয়োজনীয় সুপারিশ দেওয়ার লক্ষ্যে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি আগামী এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্স (আইইআর) পরিচালক ড. আব্দুল হালিমকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের এই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন— ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্স (আইইআর) অধ্যাপক ড. এম ওয়াহিদুজ্জামান, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) মো. লুৎফর রহমান, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের মনোনীত একজন উপসচিব, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক পদমর্যদার একজন প্রতিনিধি, মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুন্নাহার শাহীন। আর কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের উপপরিচালক (মাধ্যমিক) মো. আজিজ উদ্দিনকে।
এই কমিটি’র কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে, এই কমিটি ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যইয়ের অসঙ্গতি বা ভুল ত্রুটি চিহ্নিত করে তা সংশোধনে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান করবে। কমিটি আগামী এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবে এবং সুপারিশ প্রণয়নে কমিটি প্রয়োজনে দুই থেকে তিন জন বিষয় বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণ করতে পারবে।