জাতীয়সারাদেশ

নেতানিয়াহুকে গ্রেফতারের বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের দাবির প্রতি বাংলাদেশের পূর্ণ সমর্থন : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) চিফ প্রসিকিউটর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির যে দাবি জানিয়েছেন তাতে বাংলাদেশের পূর্ণ সমর্থন আছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ ও সাপ্তাহিক গণবাংলা আয়োজিত ‘বিশ্বশান্তি ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি স্বীকৃতি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আইসিসি’র চিফ প্রসিকিউটর নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির যে দাবি জানিয়েছেন, তা আমরা সমর্থন করি। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী এখন মানবতার শত্রুতে পরিণত হয়েছেন। তিনি এত দূর গিয়েছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের কথাও শুনছেন না।
এ সময় ফিলিস্তিন ইস্যুতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর তীব্র সমালোচনা করেন হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত ইসলামের জন্য মায়াকান্না করে অথচ সমগ্র বিশ্ব যখন গাজায় গণহত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার, তখন তারা ফিলিস্তিনের পক্ষে কখনো একটি শব্দও বলে না। আর জামায়াতের ব্যাটারা ইসলাম-ইসলাম করে মুখে ফেনা তুলে ফেলে অথচ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে, ফিলিস্তিনে হত্যার বিরুদ্ধে টু শব্দও করে না। এভাবে চুপ থেকে বিএনপি-জামায়াত ইসরায়েলের, নেতানিয়াহুর দোসরে পরিণত হয়েছে।’
গাজায় গণহত্যার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের স্পষ্ট অবস্থান তুলে ধরে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, ইসলামী কিছু দলও নির্বাচনের আগে বায়তুল মুকাররমের সামনে আন্দোলন সমাবেশ করেছে কিন্তু তারা ফিলিস্তিনের পক্ষে একটা বড় সমাবেশ করতে পারেনি, করেছে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনগুলোই।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন জরুরি। ইসরায়েলি বাহিনী নির্বিচারে গুলি করছে। মানুষ হত্যা করছে। বিশ্বের সবখানের জনগণ এখন ফিলিস্তিনের পক্ষে। তবে জাতিসংঘে যখন এ ইস্যু তোলা হয়, তখন কোনো কোনো দেশ ভেটো দেয়। এটি অত্যন্ত দু:খজনক।
তিনি বলেন, ফিলিস্তিন ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় সোচ্চার। তিনি ফিলিস্তিনের জন্য সাহায্য পাঠিয়েছেন। সবসময় ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলছেন।
সভায় প্রধান আলোচক ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেন, বাংলাদেশের অবস্থান ফিলিস্তিনের পক্ষে। বাংলাদেশ ইসরায়েলের নৃশংসতার জন্য সবসময় নিন্দা জানিয়ে আসছে। ইসরায়েল বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিলেও বাংলাদেশ তা প্রত্যাখ্যান করেছিল।
তিনি বলেন, ফিলিস্তিন ইস্যুতে আমাদের অবস্থান খুব স্পষ্ট। আমরা দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান চাই। আল আকসার সঙ্গে মুসলমানদের আবেগ জড়িত। আমরা সেখানে মুসলমানদের আলাদা ভূখ-, দেশ ও পতাকা চাই। এ বিষয়ে আমাদের সব সমর্থন ও সহযোগিতা থাকবে।
সংসদ সদস্য আওলাদ হোসেন বলেন, ফিলিস্তিনে মানবতা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। সেখানে শিশু, নারী ও পুরুষদের হত্যা করা হচ্ছে। সারা বিশ্বে এ নৃশংস হত্যাকে গণহত্যা বলে অভিহিত করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতার মা বলেই ইসরায়েলের নৃশংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করছেন।
আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য উপ-কমিটির সদস্য লায়ন মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ও আলোচকের বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব সফিকুল বাহার মজুমদার টিপু, আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিম, স্বাধীনতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন টয়েল প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *