নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে শোকাবহ আগস্টের প্রথম দিন অতিবাহিত
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোর মিছিল, রক্তদান, আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে অতিবাহিত হয়েছে শোকাবহ আগস্টের প্রথম দিন।
শোকাবহ আগস্টের প্রথম দিন আজ। ১৯৭৫ সালের এ মাসের পনের তারিখে বাঙালি হারিয়েছে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। দিনটির প্রথম প্রহরেই রোববার রাত ১২ টা ১ মিনিটে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর অভিমুখে আলোর মিছিল বের করে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ। একই কর্মসূচি পালন করে মহিলা আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগও। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত বাড়িটির সামনে সংগঠন তিনটির নেতা-কর্মীরা প্রজ্বলিত মোমবাতি হাতে জড়ো হন। পরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তারা। আলোর মিছিলে নেতৃত্ব দেন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু ও সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আফজালুর রহমান বাবু। ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন সংগঠনের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। এ সময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
শোকবহ আগস্টের প্রথম দিনে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ কৃষক লীগ স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন করে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে রাজধানীর ধানমন্ডী ৩২ এর বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর সংলগ্ন এলাকার অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির ভাষণ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি ও ড. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি সঞ্চালনা করেন।
শোকের মাসের প্রথম দিন সোমবার যুবলীগের পক্ষ থেকে মাসব্যাপী কোরআন খতম শুরু হয়েছে। এছাড়া সংগঠনের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হয়। আগস্ট মাসব্যাপী গৃহীত কর্মসূচির প্রারম্ভিক আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মো: মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
পঁচাত্তরের পনেরই আগস্ট কালরাতে ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাতে একে একে প্রাণ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশু শেখ রাসেলসহ পুত্রবধু সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল। পৃথিবীর এই ঘৃণ্যতম হত্যাকান্ড থেকে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর সহোদর শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনি, তার সহধর্মিনী আরজু মনি ও কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ জন সদস্য ও আত্মীয়-স্বজন।
বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা তখন বিদেশে থাকায় বেঁচে গেলেও ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড ছুঁড়ে হত্যার চেষ্টা হয়েছিল সেই সময়ে বিরোধী দলের নেতা, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। ভাগ্যক্রমে সেদিন তিনি বেঁচে গেলেও এই ঘটনায় সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের সহধর্মিনী, আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন।
শোকাবহ আগস্ট পালন উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন মাসবাপী কর্মসূচি পালন করবে।