দিনব্যাপী সফরে রংপুরে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানামন্ত্রী শেখ হাসিনা মহাসমাবেশসহ বেশ কয়েকটি কর্মসূচিতে যোগ দিতে দিনব্যাপী সফরে আজ বিকেলে রংপুরে পৌঁছেছেন।
বেলা ১ টা ১৩ মিনিটে হেলিকপ্টারে চড়ে রংপুর সেনানিবাসের হেলিপ্যাডে পৌঁছার পর কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে সার্কিট হাউসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিনি রংপুর বিভাগীয় সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
তিনি বিকেল ৩টার দিকে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে মহাসমাবেশে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। আর এই সমাবেশের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ নেতারা আশা করছেন রংপুরে এটি হবে বৃহত্তম সমাবেশ এবং সর্বস্তরের ১০ লাখ মানুষ সমাবেশে যোগ দেবেন।
ঢাকা ও রাজশাহীর কর্মীরা নৌকা আদলে একটি বড় মঞ্চ তৈরি করেছেন। এই মঞ্চে একসঙ্গে ৩শ’ নেতাকর্মী বসতে পারবেন।
রংপুর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত প্রায় ১২ বছর পর এই মঞ্চ থেকে বিশাল জনসভায় ভাষণ দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর পীরগঞ্জ ও তারাগঞ্জ সফরের প্রায় পাঁচ বছর পর রংপুর জেলায় প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন ধরে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে সাজসজ্জা ও আলোকসজ্জায় পুরো রংপুর সেজেছে নতুন রূপে। শহরের বিভিন্ন সড়ক সাজানো হয়েছে।
জাতির পিতা, তাঁর কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র ও প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছবি সম্বলিত বিভিন্ন পোস্টার এবং রঙিন ব্যানার ও ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে অধিকাংশ উঁচু ভবন, গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও বিভিন্ন দেওয়াল। এছাড়া বিভিন্ন সড়কে তোরণ ও স্বাগত গেট তৈরি করা হয়েছে।
আজকের জনসভাকে রংপুরের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ সমাবেশে পরিণত করতে এবং আগামী ডিসেম্বরের শেষের দিকে বা নতুন বছরের শুরুতে দিকে অনুষ্ঠিতব্য পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দলের শক্তি ও জনসমর্থন দেখাতে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো তৎপর রয়েছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি, অনুষ্ঠানস্থল পরিদর্শন করে বলেন, তারা রংপুরে বৃহত্তম জনসমাগম করবেন। তিনি আরো বলেন, এই সমাবেশে ১০ লাখেরও বেশি লোকের সমাগম হবে।
রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক এ কে এম সায়াদাত হোসেন বকুল বলেন, দলের সভাপতির গতিশীল নেতৃত্বে পুরো রংপুর একটি উন্নত জেলায় পরিণত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনে সাধারণ মানুষ উৎসাহী হয়ে উঠেছেন।
নগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ডা. দেলোয়ার হোসেন বাসস’কে বলেন, সমাবেশে ১০ লাখ লোকের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে আগের সব রেকর্ড ভাঙ্গার মধ্যদিয়ে এই ‘মহাসমাবেশকে সফল’ করতে তারা সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছেন।
উভয় নেতা বলেন, রংপুরের অভিভাবকত্ব গ্রহণের পর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রতিটি খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছেন। এসবের মধ্যে রয়েছে ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়ন। আর এসব অবকাঠামোগত উন্নয়নের মধ্যে রয়েছে অসংখ্য ব্রিজ, কালভার্ট, রাস্তাঘাট, মেডিকেয়ার সার্ভিসসহ নতুন হাসপাতাল নির্মাণ এবং হাসপাতালের শয্যা বৃদ্ধি এবং প্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুৎ প্রদান।
তারা আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী রংপুর বিভাগ করেছেন এবং রংপুরকে সিটি কর্পোরেশন ও করেছেন।
ডা. দেলোয়ার বলেন, রংপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকার সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এক হাজার দুইশ’ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
মহাসমাবেশ সফল করতে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে এবং রংপুরের প্রতিটি রাস্তা-ঘাটে মাইকিং করা হয় এবং আওয়ামী লীগ নেতারাও বৈঠক ও লিফলেট বিতরণ করেন।
দুপুর ১২টার মধ্যে অনুষ্ঠানস্থল লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেন দলীয় নেতারা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সফরকালে প্রায় ২৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং অন্যান্য পাঁচটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।