টুঙ্গিপাড়ায় শহরের সুবিধা পাচ্ছেন গ্রামের সাড়ে ৩ হাজার পরিবার
জেলার টুঙ্গিপাড়ায় পাইপ লাইনে নিরাপদ ও সুপেয় পানি পেয়ে শহরের সুবিধা পাচ্ছে গ্রামের সাড়ে ৩ হাজার পরিবার।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জম্মস্থান টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ইউনিয়ন পর্যায়ে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করে পাইপ লাইনের মাধ্যমে ৩ হাজার পরিবারে সুপেয় পানি সরবরাহ করছে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা অফিস সূত্রে জানাগেছে, প্রায় ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে টুঙ্গিপাড়া- কোটালীপাড়া উপজেলা ও পৌরসভা সমূহে নিরাপদপানি সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় ২০২১ সালে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী ও কুশলী ইউনিয়নে ২টি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে। পাটগাতী প্লান্ট থেকে ঘন্টায় ১ লাখ ৫০ হাজার লিটার নিরাপদ পানি উৎপাদন করে সকাল বিকেল ২ হাজার পরিবারকে পাইপ লাইনে সংযোগ দিয়ে সুপেয় পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়া কুশলী প্লান্টে ঘন্টায় ৫০ হাজার লিটার পানি উৎপাদ করা হচ্ছে। এ প্লন্ট থেকে কুশলী ও বর্ণি ইউনয়নের ১ হাজার ৫শ’ পরিবারে সুপেয় পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী প্রদীপ মজুমদার বলেন, গত সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রামে শহরের সুবিধা দিতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এটি বাস্তবায়ন করতে আমরা সারাদেশের মধ্যে টুঙ্গিপাড়া থেকে প্রথম প্লান্ট স্থাপন ও পাইপ লাইনের মাধ্যমে সুপেয় ও নিরাপদ পানি গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছি। এরমধ্য দিয়ে গ্রামের মানুষ শহরের সুবিধা পাচ্ছেন।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, পাটগাতী, কুশলী ও বর্ণি ইউনিয়নে গভীর নলকূপ স্থাপন করা যায়না। এসব ইউনিয়নের অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আয়রণ ও আর্সেনিক রয়েছে। এছাড়া খালের পানিতে শুস্ক মৌসুমে লবন চলে আসে। নিরাপদ পানির অভাবে ৩টি ইউনিয়নের ১০ ভাগ মানুষ ডায়রিয়া, আমাশয়, টায়ফয়েডসহ পানি বাহিত রোগে ভুগছিলেন। তাই ৩ ইউনিয়নের সব মানুষের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে ২টি পানির প্লন্ট স্থাপন করা হয়েছে। এ প্লান্টে ৪ স্তরে পানি ফিল্টার করা হয়। ইতিমধ্যে এ পানির আওতায় ৩ হাজার ৫ শ’ পরিবার এসেছে। ভবিষ্যতে এ ৩ ইউনিয়নের আরো কয়েক হাজার পরিবারকে এর আওতায় আনা হবে। সে লক্ষ্যেই কাজ চলছে।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটাগাতী ইউনিয়নের গিমাডাঙ্গা গ্রামের মোঃ হাফিজ বিশ্বাস বলেন, আমাদের ইউনিয়নের সুপেয় ও নিরাপদ পানির বড় অভাব ছিলো। এখন পানির প্লান্ট স্থাপন করে পাইপ লাইনের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এ পানির স্বাদ-গন্ধ চমৎকার। পান করতেও ভাল লাগছে। এ পানি আমাদের জীবনকে সহজ করে দিয়েছে।
উপকারভোগী মাওলানা শফিউল্লাহ বলেন, নিরাপদ পানির অভাবে আমাদের এলাকায় পানি-বাহিত রোগ ব্যাধি লেগেই থাকত। এখন আমরা ভালো পানি পাচ্ছি। এ পানি পান করে আমরা এখন পরিবার পরিজন ও প্রতিবেশীদের নিয়ে সুস্থ আছি। আমাদের মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এ পানি পান করে ভালো আছে।
উপকারভোগী জাকিয়া বেগম বলেন, গ্রামে বসেই শহরের সুযোগ পাচ্ছি। বাড়িতে পাইপ লাইনের মাধ্যমে সরকার পানি দিচ্ছে। এ পানি আমরা পান করছি। এছাড়া রান্না, গোসলসহ বাড়ির সব কাজ এ পানি দিয়েই করছি। সুপেয় নিরাপদ পানি পেয়ে আমরা খুবই উপকৃত হয়েছি। নিরাপদ পানি আমাদের জীনযাত্রায় পরিবর্তন এনে দিয়েছে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।
পাটগাতী ইউপি চেয়ারম্যান শেখ শুকুর আহম্মেদ বলেন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর পানিরপ্লান্ট করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। আমরা পানি সাপ্লাই করে গ্রহকের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছি। এ টাকা দিয়েই আমরা পানি সরবরাহ ব্যবস্থা সচল রাখছি। এ কাজে নিয়োজিতদের বেতন দিচ্ছি। সুপেয় পানি পেয়ে আমার ইউনিয়নের মানুষ খুশি। গ্রামে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।