খুনিদের নির্বাচনে নিয়ে আসার জন্য এত আহ্লাদ কেন? : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
নির্বাচনে নিয়ে আসার জন্য এত আহ্লাদ কেন? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্ন রেখে বলেছেন আজকে খুনিদেরকে নির্বাচনে নিয়ে আসার জন্য অনেকে আহ্লাদ দেখাচ্ছেন। কিন্তু কেন? যখন তারা বিদেশিদের কাছে যায় ধর্না দেয়। বিদেশিরা আমাদেরকে বলে তাদের একটু জায়গা দিতে। আমরা তো তাদেরকে জায়গা দেয়ার কেউ নই। জায়গা দেয়ার মালিক দেশের জনগণ।
আজ রবিবার (২১ আগস্ট) ২০০৪ সালের ভয়াল গ্রেনেড হামলা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে গুম-খুন নিয়ে কথা বলা হয়। কিন্তু অতীতে যারা ক্ষমতায় ছিল সেসময় আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মীকে গুম ও খুন করা হয়েছে। জিয়াউর রহমান থেকে শুরু করে যত সরকার এসেছে সব সরকারের আমলে হওয়া এসব গুন খুন সামনে নিয়ে আসতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে টানা তিন মেয়াদে সরকার পরিচালনা করছে। এ সময় দেশ অনেক উন্নত হয়েছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এ অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতে ষড়যন্ত্র চলছে।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার কথা স্মরণ করে আওয়ামী লীগের এই সভাপতি বলেন, আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের মাত্র ১৫ দিন আগে আমি ও রেহানা বিদেশে যাই। ফলে সেদিন প্রাণে বেঁচে যাই। ২১ আগস্ট আমাকে হত্যা করার জন্য এ হামলা চালানো হয়। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ‘মানববর্ম’ তৈরি করে আমাকে বাঁচিয়েছেন। ‘রাখে আল্লাহ মারে কে, মারে আল্লাহ রাখে কে’। সারাদেশ ঘুরেছি। যেখানেই গেছি, সেখানেই আমার ওপর হামলা হয়েছে, আমাকে হত্যার পায়তারা চলেছে। আল্লাহর রহমতে বেঁচে আছি।
তিনি আরও বলেন, গ্রেনেড হামলার পর তারা ভেবেছিল, আমি বেঁচে নেই। কিন্তু যখন দেখল আমি বেঁচে আছি তখন খালেদা জিয়া ওইদিন রাতেই কয়েকজন খুনিকে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সে করে বিদেশে পাঠিয়ে দেন। জাতির পিতার খুনি রশিদ ও ডালিম সে সময় বাংলাদেশেই ছিলেন। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া তাদেরকে দেশে এনেছিলেন। আমি মরিনি দেখে খালেদা জিয়া তাদেরকে আবার বিদেশে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেন। আজকে তারা বিভিন্ন দেশে পালিয়ে আছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা তখন বিরোধী দলে। আইভী রহমানসহ গ্রেনেড হামলায় এত মানুষ মারা গেল। তখনকার বিরোধী দল আওয়ামী লীগের ছয়জন সংসদ সদস্য আহত হয়েছিলেন। অথচ এ হামলা নিয়ে সংসদে তৎকালীন সরকার কোনো নিন্দা প্রস্তাব আনতে দিল না। এ নিয়ে আমরা কথা বলতে চেয়েছি সেটাও করতে দেয়া হলো না। বিরোধী দলের নেতা হিসেবে আমি কথা বলতে চেয়েছিলাম আমার মাইক বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ থেকে এ অবস্থায় যখন আমি গাড়িতে উঠে সুধাসধনে পৌঁছলাম, তখন আমার গাড়ির ড্রাইভার মতিন সাহসী ছিলেন। তিনি গাড়ি ছেড়ে যাননি। গাড়িতে উঠেছি সে সময়ও আমাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া হলো। কিন্তু আমার দেহরক্ষী মাহবুব মারা যায়। বাসায় গিয়ে নেতাকর্মীদেরকে বললাম, যারা আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে আছে, ‘তাদের আগে চিকিৎসার ব্যবস্থা করো। রক্ত দাও। তারা ছুঁটে যায়’।