একনেক সভায় ২ হাজার ৭ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষ ৭ প্রকল্পের অনুমোদন
‘ময়মনসিংহ বিভাগের বিভাগীয় সদর দফতর স্থাপনের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত ভূমি অধিগ্রহণ, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদান ও পুনর্বাসন কাজ’ শীর্ষক প্রকল্পসহ মোট ৭ প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১ হাজার ৮৩১ কোটি ৪০ লাখ টাকা, বাস্তবায়নকারি সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৫৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ সহায়তা থেকে ১২২ কোটি ৭৬ লাখ টাকার অর্থায়ন পাওয়া যাবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সভাকক্ষে একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় অংশগ্রহণ করেন।
পরে, সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী একনেক সভায় বাঁধ টেকসই করতে নাফ নদী, টেকনাফ ও বঙ্গোপসাগরের পোল্ডারসহ কক্সবাজার এলাকার বাঁধসমূহে বেশি বেশি করে ঝাউ গাছ লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের পোল্ডারে বেশি বেশি ঝাউগাছ লাগাতে হবে, যাতে বেড়িবাঁধ টেকসই হয়। একইসাথে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণা কার্যক্রম সম্প্রসারণের নির্দেশনা দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় টেলিটক নেটওয়ার্কের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে ৫জি প্রযুক্তি চালুকরণ প্রকল্পটি একনেকে উপস্থাপন করা হয়। কিন্তু প্রকল্পটি আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। যেহেতু আমরা এই মুহূর্তে ব্যয় সংকোচন করছি, আর এর সকল যন্ত্রাংশ বাইরে থেকে আমদানি করতে হবে, তাই এটি আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন, আগে ফোর-জি আপডেট করতে। তিনি এরপর ফাইভ-জি প্রযুক্তি চালু করার উদ্যোগ নিতে বলেছেন।
মান্নান জানান, ‘ময়মনসিংহ বিভাগের বিভাগীয় সদর দফতর স্থাপনের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত ভূমি অধিগ্রহণ, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদান ও পুনর্বাসন কাজ’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ১ হাজার ২২৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয় হবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ৭টি সিটি কর্পোরেশন ও ৩৭টি জেলা পর্যায়ে প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় আধুনিক যন্ত্রপাতি বিশেষ করে ৮১টি হুইল লোডার, ২৪টি ব্যাকহো লোডার এবং ৬৪টি এসফল্ট রোলার কেনা হবে। এখাতে মোট ব্যয় হবে ১৫০ কোটি ৬২ লাখ টাকা। এ লক্ষ্যে ‘প্রকিউরমেন্ট অব মেশিনারিজ অ্যান্ড ইক্যুইপমেন্ট ফ্রম বেলারুশ ফর সিলেকটেড মিউনিসিপালিটিস’ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যেটি জুলাই ২০২১ হতে জুন ২০২৩ মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে।
একনেকে অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে-কক্সবাজার জেলার বাংলাদেশ-মায়ানমারে সীমান্ত নিরাপত্তা উন্নত করার জন্য উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় নাফ নদী বরাবর পোল্ডারগুলোর (৬৭/এ,৬৭, ৬৭বি এবং ৬৮) পুনর্বাসন প্রকল্প, এ লক্ষ্যে ব্যয় ধরা হয়েছে ২২৭ কোটি টাকা। উত্তরা লেক উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা। ঢাকা কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, রাজশাহী প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।
এছাড়া, অঞ্চলভিত্তিক জলবায়ু সহনশীল জাত উদ্ভাবন ও ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উন্নত গ্রিণহাউজ স্থাপন প্রকল্প গ্রহণ করবে।