উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধিই হবে সরকারের মূল কাজ : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ এবং জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখাই হচ্ছে নতুন মেয়াদে তার সরকারের মূল কাজ।
তিনি বলেন, আমাদের প্রধান কাজ হলো চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা, দাম নিয়ন্ত্রণ করা এবং জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
টুঙ্গিপাড়ায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে তার নিজ নির্বাচনী এলাকা (গোপালগঞ্জ-৩) নেতাকর্মীদের সঙ্গে নির্বাচন-পরবর্তী শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে এবং টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করে।
বাজারে খাদ্যদ্রব্যের কোনো ঘাটতি নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গ্রামাঞ্চলে বড় ধরনের কোনো সমস্যা দেখি না, তবে নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ এবং রাজধানী ঢাকায় বসবাসকারী মানুষ বিভিন্ন পণ্যের দাম বেশি হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।’
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, মনে হচ্ছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল জনগণের ভোগান্তি বাড়াতে ইচ্ছাকৃতভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি করে।
তিনি বলেন, ‘এর জন্য আমাদের যথাযথভাবে তদারকি বাড়াতে হবে।’
তিনি দেশে উৎপাদন বাড়ানোর ওপরও জোর দেন।
দেশে নিজের খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর কারণ ব্যাখ্যা করে প্রধানমন্ত্রী আশঙ্কা প্রকাশ করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের ইয়েমেনে হুতিদের ওপর হামলার কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে আরেকটি আঘাত আসতে পারে।
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের বিষয়ে তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র এখনো শেষ হয়নি, স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্র চলছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এই ষড়যন্ত্র দুই ভাগে বিভক্ত। এক হচ্ছে খুনি বা অপরাধী, যুদ্ধাপরাধী যাদের বিচার নিশ্চিত করা হয়েছে, তারা ষড়যন্ত্র করছে। আরেকটি আন্তর্জাতিক স্তরের।
শেখ হাসিনা বলেন, অন্যান্য কারণ ছাড়াও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের ওপর অনেক দেশের কুদৃষ্টি রয়েছে।
তিনি তার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশে বসে অন্য কোনো দেশে সন্ত্রাসী হামলা চালাতে তিনি কাউকে অনুমতি দেবেন না এবং মেনে নেবেন না।
তিনি বলেন, ‘আমরা স্বাধীন এবং সার্বভৌম দেশ, আমরা স্বাধীনভাবে চলাফেরা করব, আমরা আকারে ছোট হতে পারি, কিন্তু আমাদের বিশাল জনসংখ্যা রয়েছে, তারাই আমার সবচেয়ে বড় শক্তি।’
তিনি উল্লেখ করেন যে তাকে এবং আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আসতে না দেওয়ার ষড়যন্ত্র হয়েছে, কিন্তু দেশের মানুষ নির্বাচনের মাধ্যমে তার উপযুক্ত জবাব দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না এটাই স্বাভাবিক এবং সে কারণেই বিএনপি নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছিল।
এ প্রসঙ্গে তিনি বিএনপির অগ্নিসংযোগের কথা উল্লেখ করে বলেন, ট্রেনে আগুন দেওয়ার মত এই জঘন্য ঘটনা ঘটিয়ে নিরীহ মানুষের মৃত্যু ঘটায়।
শেখ হাসিনা বলেন, আগামী দিনে নতুন সরকারকে সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে চলতে হবে।
দ্রুত মন্ত্রিসভা গঠন নিয়ে বিএনপির সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, মন্ত্রিসভা গঠনে বিলম্বের যৌক্তিকতা কী?
তিনি বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা করি না, আমরা জানতাম নির্বাচন করবো, আমরা নির্বাচনে জিতলে বা নির্বাচনে হেরে গেলে আমরা কী করব, আমরা কেন সময় নেব, কেন সময় নষ্ট করব।
তিনি উল্লেখ করেছেন যে তিনি প্রতিটি দিন ব্যবহার করতে চান, কারণ, তিনি দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে চান।
তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখতে সকল প্রকার ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করতে সকলের কাছে দোয়া কামনা করেন।