’৭১-এর পরাজিত অপশক্তির আস্ফালন মেনে নেওয়া হবে না : ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ’৭১-এর পরাজিত অপশক্তির কোন প্রকার আস্ফালন মেনে নেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি ধৃষ্টতার শামিল। স্বাধীনতার পরাজিত অপশক্তির কোন প্রকার আস্ফলন আওয়ামী লীগ মেনে নিবে না। কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে কোন জনদুর্ভোগ মেনে নিবে না সরকার। যে কোনো অপশক্তিকে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।’
ওবায়দুল কাদের আজ সোমবার দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা’র ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে সরকারবিরোধী আন্দোলনের চেষ্টা চলছে। এতে বিএনপির সমর্থন ও যোগসাজশ রয়েছে। রোববার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের অস্তিত্বকে আঘাত করে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী স্লোগানের মাধ্যমেই এ আশঙ্কা প্রমাণিত হয়েছে। রাজাকারের চেতনা লালনকারীরাও রাজাকার।
তিনি বলেন, এ দেশের মাটিতে রাজাকারের ঠাঁই নেই, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য যথার্থ ছিল। পরাজিত শক্তির আস্ফালন মেনে নেওয়া হবে না। যারা দেশের গৌরবকে অস্বীকার করে রাজাকার পরিচয় দেন, তারা কীভাবে নিজেদের মেধাবী পরিচয় দেন?
ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলনের কুশিলব বিএনপি-জামায়াত। আল্টিমেটাম দেওয়া সরকারের বিরুদ্ধে দৃষ্টতা। কোটা সংস্কার নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। জনদুর্ভোগ মেনে নেওয়া হবে না। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের জবাব দিতে ছাত্রলীগসহ স্বাধীনতার সপক্ষের সবাই প্রস্তুত।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, রাজাকার পরিচয় জাতীয় চেতনার পরিপন্থী। স্বাধীনতার পরাজিত অপশক্তির কোনো প্রকার আস্ফালন আওয়ামী লীগ মেনে নেবে না। নিজেদের কীভাবে রাজাকার বলে পরিচয় দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা? রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চেতনার পরিপন্থী হয়ে কিভাবে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। তাদের কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, রোববার (১৪ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য আন্দোলনের নেপথ্যে নেতা, মতলববাজ, কুশীলবরা স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য বিকৃত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী সংবাদকর্মীদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, কোটা সুবিধা মুক্তিযোদ্ধার নাতি-পুতিরা পাবে না তো রাজাকারের নাতি-পুতিরা পাবে! এ কথা তিনি যথার্থই বলেছেন।
তিনি বলেন, ৩০ লাখ শহীদের রক্তস্নাত দেশে রাজাকারের আইন চলতে পারে না। দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই, মহান মুক্তিযুদ্ধ, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো অপমান বাঙালি জাতি সহ্য করবে না। বাংলাদেশের স্বাধীনতায় পরাজিত অপশক্তির কোনো রকম আস্ফালন আমরা মেনে নেব না।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা বা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মী বেঁচে থাকতে শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত পরাজিত অপশক্তির অপতৎপরতা প্রতিরোধ করা হবে। যে ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের মহান আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়, নিজেদের রাজাকার পরিচয় দিতে গৌরববোধ করে তাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করে না?
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক ও শাজাহান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, সংবাগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন ও সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।