স্পেনে আটক পাঁচ বাংলাদেশির মুক্তি ত্বরান্বিত করার অনুরোধ
স্পেনের গালিসিয়া প্রদেশের কারাগারে আটক পাঁচ বাংলাদেশি নাগরিকের মুক্তির বিষয়টি ত্বরান্বিত করার জন্য স্পেনের সরকারকে অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ। ওই দেশে কর্মরত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ইতোমধ্যে স্পেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে তাগাদা দিয়েছে।
রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা আটক বাংলাদেশিদের তিন ধরনের সহায়তা দিচ্ছি। প্রথমত, এই বিপদের সময়ে মানসিক সহায়তা দেওয়ার জন্য আমরা তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। অনেক সময়ে আমাদের লোক গিয়ে তাদের বাংলাদেশি খাবারও পৌঁছে দিয়ে আসে।’
তাদের পরিবারের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছে দূতাবাস জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘তাদের আমরা আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য যা করা দরকার, সেটি করছি।’
উল্লেখ্য, আটক ওই পাঁচ বাংলাদেশি পানামার একটি জাহাজে নাবিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ওই জাহাজটি গত বছরের মাঝামাঝি স্পেনে নোঙর করাকালে মাদক পণ্য পাওয়া যায় এবং সন্দেহভাজন হিসেবে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বর্তমানে আইনি প্রক্রিয়া চলছে। আমরা তাদের (স্পেনকে) অনুরোধ করেছি— প্রক্রিয়াটি যেন দ্রুত শেষ হয়। ইতোমধ্যে প্রধান সন্দেহভাজন (একজন নেপালি) স্বীকার করেছেন যে মাদক বহনের সঙ্গে বাংলাদেশিরা জড়িত নয়।’
ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণ
স্পেনের ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের জটিলতার শিকার হন বাংলাদেশিরা। ইউরোপে বাংলাদেশি পণ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার হচ্ছে স্পেন এবং এশিয়ায় স্পেনের চতুর্থ বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার বাংলাদেশ। স্পেনে ৩০০ কোটি ডলারের বেশি পণ্য রফতানি করা হলেও জটিলতা দূর হচ্ছে না।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমি এ বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে একাধিকবার উত্থাপন করেছি। আমি তাদের বলেছি, ভিসা প্রক্রিয়া সহজ না হলে বাণিজ্য সম্প্রসারণ করা কঠিন হবে। আমি আশা করি মন্ত্রণালয় তাদের ঢাকা দূতাবাসকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।’
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স
বিদেশে যাওয়ার আগে বাংলাদেশিদের পুলিশি ক্লিয়ারেন্স প্রয়োজন হয়। স্পেন পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের পরিবর্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্স চেয়ে থাকে, যা সংগ্রহ করা একান্ত দুরূহ।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘ক্লিয়ারেন্সে একটি সেবা, যা পুলিশ দিয়ে থাকে। অপরদিকে মন্ত্রণালয়ের কাজ হচ্ছে নীতিনির্ধারণী বিষয়গুলো ঠিক করা। সেই অর্থে জনগণকে সরাসরি সেবা দেওয়া মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়।’
অন্য কোনও দেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্স চায় না, শুধু স্পেন চায় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি তাদের বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করেছি, যাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্স যেন না চায়।’
উল্লেখ্য, স্পেনে ৫০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি বসবাস করছেন। তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রবাসী কমিউনিটি। তারা দুই দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।